সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ আজ সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কার্যালয়ে গিয়েছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে দেখতে। তবে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। ছয় সমন্বয়ক কখন ছাড়া হবে, সে বিষয়েও কোনো সদুত্তর পাননি তিনি।
বিকেল পাঁচটার দিকে ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন সোহেল তাজ। সন্ধ্যা সাতটার দিকে ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের জানান, বিবেকের তাড়নায় তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের খোঁজ নিতে এসেছিলেন। কিন্তু ডিবির কর্মকর্তারা তাঁর কোনো প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।
সোহেল তাজ জানান, তাঁর প্রথম প্রশ্ন ছিল, সমন্বয়কারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না বা নিরাপদ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে কি না। দ্বিতীয় প্রশ্ন, যদি তারা গ্রেপ্তার হয়ে থাকে, তাহলে কোনো দাবি নেই। কিন্তু যদি নিরাপদ হেফাজতে নেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে তিনি তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে চান। ডিবিপ্রধান জানিয়েছেন, সমন্বয়কারীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ায় তাঁদের নিরাপদ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে দেখা করতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন।
তৃতীয় প্রশ্ন ছিল, সমন্বয়কারীদের কখন মুক্তি দেওয়া হবে। ডিবিপ্রধান জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাঁদের ছাড়া হবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাত সমন্বয়ক বর্তমানে ডিবির হেফাজতে আছেন, তাঁদের মধ্যে ছয়জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সোহেল তাজ বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে দেশে অশান্তি বিরাজ করছে। এখানে শত শত মানুষ নিহত হয়েছে। নিরীহ পাঁচ বছরের বাচ্চা থেকে শুরু করে অনেকের প্রাণহানি হয়েছে। এই বিবেকের কারণেই ব্যক্তিগতভাবে ডিবি অফিসে এসেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো নাগরিক যদি অনুরোধ করে, তাহলে নিরাপদ হেফাজতে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু অনুরোধের বাইরে হলে সেটা গ্রেপ্তার নয় কি?’
সোহেল তাজ বলেন, ‘প্রাণের মূল্য কোটি কোটি টাকার চেয়ে অনেক বেশি। আমাদের ছাত্রছাত্রী ভাইবোনের বুকে যাতে আর গুলি না যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে এটাই আমার অনুরোধ।’
বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার কোনো ভুল পদক্ষেপ নিচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট তদন্ত ও বিচার করতে হবে। এই সমাধান রাজনৈতিকভাবে করতে হবে এবং আলোচনার মাধ্যমে করতে হবে।’
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই দেশ তোমাদের। আশা ছেড়ো না। সামনে ভালো দিন আসবে। এই দেশ তোমাদের সম্পদ, তোমাদেরই গড়তে হবে।’