ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরেই রাশিয়ার নজরে রয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—দোনেৎস্কের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বিনিময়েই যুদ্ধ স্থগিত করবেন তিনি। বর্তমানে রাশিয়া দোনেৎস্কের প্রায় ৭০ শতাংশ এবং প্রতিবেশী লুহানস্ক প্রদেশের প্রায় পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এখন ধাপে ধাপে দোনেৎস্কের বাকি অংশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে মস্কো।
বিবিসির খবরে বলা হয়, দোনেৎস্কের ডোব্রোপিলিয়া শহরে অসুস্থ, প্রবীণ ও শিশুদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। শহরটি রাশিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এক সপ্তাহ ধরে পানি সংকটে ভুগছে স্থানীয়রা। অধিকাংশ ভবন রুশ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
৩১ বছর বয়সী জার্মান লার্জ ও ১৯ বছর বয়সী ইউক্রেনীয় তরুণী ভারিয়া, দাতব্য সংস্থা ইউনিভার্সাল এইড ইউক্রেন-এর হয়ে পাঁচ দিন ধরে স্থানীয়দের সরিয়ে নিতে কাজ করছেন। তবে রুশ সেনারা ইতোমধ্যে শহরের চারপাশের প্রতিরক্ষা ভেঙে ফেলায় যে কোনো সময় পতনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলাস্কায় আলোচনায় বসেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আলোচনার মূল বিষয় ছিল—কিয়েভকে দনবাস অঞ্চল ছাড়তে রাজি করানো। ২০২২ সালে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের অন্যতম লক্ষ্যও ছিল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে নিজেদের প্রভাব বলয়ে আনা।
দনবাসকে ইউক্রেনের শিল্পাঞ্চলের প্রাণ বলা হয়। কয়লা ও লৌহসমৃদ্ধ এ অঞ্চল শুধু ইউক্রেন নয়, গোটা দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ খনি ও শিল্প এলাকা। এখানেই পুতিনের কৌশলগত নজর বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধানে রাশিয়া বেশ কিছু ছাড় দিয়েছে। এর মধ্যে ইউক্রেনকে ভবিষ্যতে রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য নিরাপত্তা গ্যারান্টির প্রতিশ্রুতিও রয়েছে। যদিও সংঘাত সমাপ্তির সুনির্দিষ্ট কোনো ইঙ্গিত এখনো মেলেনি।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তাঁর দেশ কোনো চাপের মুখে আপস করবে না। স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে তিনি বলেন, “ইউক্রেন নিজের ভবিষ্যৎ নিজেই নির্ধারণ করবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সেটি সম্মান করবে।”
স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে যোগ দিতে কিয়েভ সফর করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। বৈঠকে তিনি ইউক্রেনের প্রতি কানাডার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
এদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আরও এক দফা বন্দিবিনিময় হয়েছে। আলজাজিরার খবরে বলা হয়, দুই পক্ষই ১৪৬ জন করে মোট ২৯২ যুদ্ধবন্দি ফেরত দিয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মুক্তিপ্রাপ্ত সেনাদের বেলারুশে চিকিৎসা ও পুনর্বাসন দেওয়া হচ্ছে।