ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
ঢাকা, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসন্ন ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে জমে উঠেছে সরব প্রস্তুতি। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ইতোমধ্যে প্যানেল ঘোষণা ও প্রচার-প্রচারণায় নেমে গেলেও বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এখনও পিছিয়ে। সাংগঠনিক দুর্বলতা, অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং নিয়মিত ছাত্রনেতার অভাব—সব মিলিয়ে ছাত্রদল এখনো নির্বাচনী তৎপরতায় পিছিয়ে আছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিন আজ সোমবার। গতকাল পর্যন্ত ছাত্রদলের কেউ ফরম নেননি। একই অবস্থা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (রাকসু)। যদিও স্বতন্ত্র প্রার্থী, ইসলামী ছাত্রশিবির ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) নেতারা ইতোমধ্যেই মনোনয়ন জমা দিয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন।
ডাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক জসীম উদ্দিন বলেন, “এখন পর্যন্ত ছাত্রদলের কেউ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেনি।”
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দীর্ঘ ১৫ বছর ছাত্রদল ক্যাম্পাসে দমন-পীড়নের মুখে পড়ে। এর প্রভাবেই সাংগঠনিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ে বলে মনে করেন সংগঠনের নেতারা। ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচনের পর এবার নতুন করে কমিটি গঠন করা হলেও অনেক জ্যেষ্ঠ নেতা আর নিয়মিত ছাত্র নন। ফলে তারা প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না।
ছাত্রদল সূত্র জানায়, ডাকসু ও রাকসুতে প্রার্থিতা নিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে প্যানেল চূড়ান্ত না হওয়ায় মাঠে নামতে দেরি হচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি ঘোষণা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন ছাত্রদল নেতারা। সদ্য ঘোষিত কমিটির পদবঞ্চিত নেতারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। এতে প্যানেল গঠনের প্রক্রিয়া আরও পিছিয়ে যায়।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, “কমিটি নিয়ে মনোমালিন্য থাকলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। ভিপি ও জিএস প্রার্থী দ্রুত ঘোষণা করা হবে।”
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও পরিস্থিতি ভিন্ন নয়। সম্প্রতি ঘোষিত ছাত্রদলের কমিটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ছাত্রত্ব না থাকায় তারা প্রার্থী হতে পারছেন না। ফলে রাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেল গঠনে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যদিও কিছু হলে কর্মীরা প্রচার শুরু করেছেন, কিন্তু কেন্দ্রীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
শাখা সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “আমাদের দাবিগুলো মানা না হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করব। তবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াব না।”
ডাকসুর ভোট ৯ সেপ্টেম্বর, জাকসুর ১১ সেপ্টেম্বর এবং রাকসুর ভোট হবে ১৫ সেপ্টেম্বর। দীর্ঘ বিরতির পর এসব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে—ডাকসুতে ২৯ বছর, আর জাকসু ও রাকসুতে ৩৫ বছর পর। নব্বইয়ের দশকে এই তিন বিশ্ববিদ্যালয়েই জয়ী হয়েছিল ছাত্রদল।