ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
রাজশাহীর পবা উপজেলার বামনশিখর গ্রামে একই পরিবারের চারজনের মৃত্যুর পর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হলে পারিবারিক জটিলতার পর সমঝোতার ভিত্তিতে পৃথক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মৃতদের মধ্যে মিনারুল ইসলাম (৩০) ও তাঁর ছেলে মাহিন (১৩)-এর দাফন হয়েছে বামনশিখরে। আর মিনারুলের স্ত্রী মনিরা খাতুন (২৮) ও তাদের এক বছরের মেয়ে মিথিলাকে দাফন করা হয়েছে রাজশাহী শহরের টিকাপাড়ায়।
পুলিশ ও নিহতদের পরিবার জানায়, মনিরার মা শিউলি বেগম চান তাঁর মেয়ে ও দুই নাতিকে বাড়ির পাশের কবরস্থানে দাফন করতে। কিন্তু মিনারুলের পরিবার আপত্তি জানায়। তারা প্রথমে চারটি মরদেহই নিতে চেয়েছিল। পরে তিনটি মরদেহ নেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। শেষ পর্যন্ত উভয় পক্ষের সমঝোতায় মিনারুল ও তাঁর ছেলে মাহিনকে বামনশিখরে, আর মনিরা ও মিথিলাকে টিকাপাড়ায় দাফন করা হয়।
পারিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ আলী বলেন, “দাফন নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। পরে আলোচনা করে সমঝোতার ভিত্তিতে মরদেহ ভাগ করে দাফন করা হয়।”
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে দুটি মামলা হয়। মিনারুলের বাবা রোস্তম আলী নগরীর মতিহার থানায় অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে মনিরার মা শিউলি বেগম তাঁর মেয়ে ও নাতি-নাতনিকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ এনে হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক বলেন, “মিনারুল একটি চিরকুট লিখে গেছেন যেখানে উল্লেখ আছে, ঋণের চাপ ও খাওয়ার অভাবে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ফরেনসিক পরীক্ষায় যদি বিষয়টি প্রমাণিত হয়, তাহলে হত্যা মামলা চলবে না। চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে। তবে যদি ফরেনসিক পরীক্ষায় তা না মেলে, তখন তদন্ত করে প্রকৃত খুনিদের শনাক্ত করা হবে।”
তিনি আরও জানান, মিনারুলের কাছে অনেকের টাকা পাওনা ছিল। ওই দেনার চাপের বিষয়টিও তদন্ত করা হচ্ছে।
শুক্রবার সকালে মিনারুল ইসলামের বাড়ির দুটি ঘর থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মিনারুলকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর পাশে বিছানায় ছিল ছেলে মাহিন। অন্য ঘরে বিছানায় শুয়ে ছিল স্ত্রী মনিরা ও শিশু মিথিলা।
পুলিশ মিনারুলের ঘর থেকে দুই পাতার একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি মিনারুল লিখেছেন। সেখানে লেখা ছিল: “আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে।”