ডেস্ক রিপোর্ট, সকলের কণ্ঠ
নারী ফুটবলের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বড় পরিসরে আত্মপ্রকাশের লক্ষ্যে নতুন করে জোরালো উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। ২০২৬ নারী এশিয়ান কাপ সামনে রেখে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা দেশগুলোর সঙ্গে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা করছে সংস্থাটি। এরই অংশ হিসেবে আর্জেন্টিনার নারী ফুটবল দলকে ঢাকায় আনার চেষ্টাও চলছে।
বাফুফের সহসভাপতি ফাহাদ করিম জানিয়েছেন, অক্টোবর ও নভেম্বরে ফিফা উইন্ডোকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে ২০-২৫টি দেশের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে এবং কোস্টারিকার মতো লাতিন আমেরিকার দলও। ফাহাদ করিম বলেন, ‘আমরা চিঠি দিয়েছি জানতে, তারা বাংলাদেশে আসতে পারবে কিনা। না পারলে আমরা প্রয়োজনে তাদের দেশে গিয়ে খেলব।’
এর আগে ২০২৩ সালে বাফুফের সাবেক সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন আর্জেন্টিনার নারী দলকে ঢাকায় আনার উদ্যোগ নিলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। তবে বর্তমান সভাপতি তাবিথ আউয়াল সেই প্রচেষ্টা আবারও জীবন্ত করে তুলেছেন।
এবার প্রথমবারের মতো নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলবে বাংলাদেশ। গ্রুপ ‘বি’-তে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী চীন, উত্তর কোরিয়া ও উজবেকিস্তান। বড় এই মঞ্চে ভালো করতে হলে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে—এই ভাবনা থেকেই মেয়েদের জন্য ছয় মাসের একটি পরিকল্পনা নিয়েছে বাফুফে। সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে আবাসিক ক্যাম্প।
বাফুফের লক্ষ্য—এশিয়ান কাপে অংশ নেওয়ার আগে অন্তত ৮টি আন্তর্জাতিক প্রস্তুতি ম্যাচ আয়োজন করা। এজন্য ইউরোপ, এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। ইউরোপে সার্বিয়ার সঙ্গে প্রস্তাবনা আদান-প্রদান চলছে। এশিয়ার মধ্যে থাইল্যান্ড, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও চীনের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
বাংলাদেশ নারী দল টানা দুইবার সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশের বিপক্ষে ফিফা উইন্ডোতে ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা নেই বাফুফের। কারণ, এখন দলকে শুধু দক্ষিণ এশিয়ার গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ রাখতে চায় না তারা।
দলের ব্রিটিশ কোচ ইতোমধ্যেই কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দিয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে সৌদি আরবে গিয়ে ক্যাম্প করা এবং অন্তত চারটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলা। বাফুফে কর্তারা এই প্রস্তাব গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছেন।
আন্তর্জাতিক মানের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচ আয়োজন করতে গিয়ে অর্থায়ন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান ফাহাদ করিম। তবে তবুও আশাবাদী তিনি। ‘আমরা ধরেই নিয়েছি, তিনটি দলের (এশিয়ান কাপের গ্রুপ প্রতিপক্ষ) সঙ্গে হারব—তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু এই পর্যায়ে খেলার অভিজ্ঞতা হবে মেয়েদের জন্য বিশাল ব্যাপার। এমনও হতে পারে, আমরা উজবেকিস্তানকে হারাতে পারি। মেয়েদের নিয়ে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আছে,’ বলেন তিনি।
বর্তমানে স্বপ্না রানী, মনিকা চাকমা, ঋতুপর্ণা চাকমা, আফঈদা খন্দকারদের নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ নারী দল কেবল সাফ অঞ্চলে নয়, এবার এশিয়া এবং বিশ্ব ফুটবলে নিজেদের জানান দিতে প্রস্তুত হচ্ছে। সেই লক্ষ্যেই আর্জেন্টিনার মতো পরাশক্তিদের বিপক্ষে ম্যাচ আয়োজনের চেষ্টা।