কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. তাহসীন বাহার সূচনাকে আজ সোমবার (১৯ আগস্ট) দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে জারি করা দুটি প্রজ্ঞাপনে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হয়। মেয়র অপসারণের খবর ছড়িয়ে পড়তেই কুমিল্লা নগরীতে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়।
প্রজ্ঞাপনে দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রদেরও অপসারণ করা হয়েছে এবং তাদের স্থলাভিষিক্ত করে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাহসীন বাহার সূচনা পাঁচ মাস আগে উপনির্বাচনে বিজয়ী হয়ে মেয়র পদে শপথ নিয়েছিলেন। তবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি কার্যক্রম যথাযথভাবে গুছিয়ে উঠতে পারেননি।
তাহসীন বাহার সূচনার মেয়র হিসেবে কার্যক্রম নিয়ে নগরজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়, বিশেষ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তার নেতিবাচক ভূমিকা নিয়ে। সেই সময়ে তিনি শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেন এবং ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে আন্দোলনের বিরোধিতা করেন। তার এই অবস্থানের কারণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়।
এ ছাড়া, গত ৪ আগস্ট কুমিল্লার কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হাতে মাসুম মিয়া নামক এক ব্যক্তির নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাহসীন বাহার সূচনার নামও একটি মামলায় উল্লেখ করা হয়। এতে আরও ৬২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৪০০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়।
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু জানান, সূচনা মেয়র নির্বাচনে জয়ী হননি, বরং জোরপূর্বক ভোট দিয়ে জয়ী হয়েছেন। এছাড়া, নগরবাসী তার মেয়র পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তার দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে অসন্তুষ্ট ছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক জান্নাতুল ইভা জানান, আন্দোলনের সময় সূচনা শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেন এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। এসব কারণেই তিনি কুমিল্লা শহরে বিতর্কিত হয়ে ওঠেন।
তাহসীন বাহার সূচনার অপসারণে নগরবাসী যেন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। এই সিদ্ধান্তকে তারা একটি সঠিক ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।