ঢাকা: বর্তমানে দেশে ঘুষের মাত্রা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি জানান, আগে যেখানে এক লাখ টাকা ঘুষ দিতে হতো, এখন সেখানে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে। শনিবার ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান রচিত ‘অর্থনীতি, শাসন ও ক্ষমতা: যাপিত জীবনের আলেখ্য’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই তথ্য জানান। একজন বড় ব্যবসায়ী তাকে এই তথ্য দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হোসেন জিল্লুর রহমান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই মুহূর্তে কোথাও কোনো সুশাসন এবং যথাযথ নিয়ন্ত্রণ বিদ্যমান নেই। পুলিশের চরিত্রে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি, যদিও রাতারাতি সংস্কার করা সম্ভব নয় এবং এর জন্য সময়ের প্রয়োজন। তবে এই যুক্তিতে গণতান্ত্রিক চর্চা বাদ দিয়ে বসে থাকা যায় না। কোনো প্রকার সিদ্ধান্ত জনগণের উপর চাপিয়ে দেওয়াও উচিত নয়। তাই, আর বিলম্ব না করে অতি দ্রুত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যাওয়া জরুরি। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সংসদে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোকে দেশের উন্নয়ন ও জনস্বার্থে সবসময় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করার কথা স্মরণ করিয়ে দেন মির্জা ফখরুল।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে ভালো প্রতিষ্ঠানের অভাব রয়েছে। আইনের শাসন দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়া ধ্বংস করা হয়েছে। তিনি বলেন, মানুষ একই আছে, তাদের চরিত্রে পরিবর্তন আসেনি। সবকিছু বাদ দিয়ে নতুন করে শুরু করা সম্ভব নয়। তাই, স্নেহ ও শাসনের মাধ্যমে কাজ আদায় করতে হচ্ছে।
সালেহউদ্দিন আহমেদ সুশাসনের অভাবের কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের ক্ষমতার ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ নেই। এই জায়গায় সংস্কার আনা না গেলে অন্যান্য যেকোনো সংস্কারই বৃথা যাবে। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরেও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।