লোহিত সাগরে সাম্প্রতিক সময়ে হুতি বিদ্রোহীদের টার্গেটকৃত হামলায় ডুবেছে আরও দুটি বাণিজ্যিক জাহাজ। এতে এখন পর্যন্ত চারজন নাবিক নিহত এবং অন্তত ১৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
গত সোমবার (৭ জুলাই) গ্রিসের মালিকানাধীন ‘ইটার্নিটি সি’ জাহাজে চালকবিহীন বিস্ফোরকবাহী নৌকা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। হামলার দুদিন পর, ৯ জুলাই জাহাজটি লোহিত সাগরের হোদেইদাহ উপকূলে সম্পূর্ণভাবে ডুবে যায়।
হুতিদের সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে জানান, ইটার্নিটি সি ইসরায়েলের দিকে যাচ্ছিল। গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি এবং ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাব হিসেবে হামলা চালানো হয়েছে।
হামলার পর হুতিরা দাবি করে, তারা ছয়জন নাবিককে উদ্ধার করে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে এবং নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। তবে চারজন নাবিক নিহত হয়েছেন এবং এখনও ১৫ জনের কোনও খোঁজ মেলেনি।
হুতিরা হামলার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে জাহাজের ওপর চালানো হামলার দৃশ্য, বিস্ফোরণ এবং নাবিকদের জাহাজ ছাড়ার নির্দেশনা প্রদানের টেলিফোন কল সংবলিত ফুটেজ দেখা গেছে।
এ ঘটনায় মার্কিন দূতাবাস হুতিদের বিরুদ্ধে নাবিক অপহরণের অভিযোগ এনেছে এবং দ্রুত তাদের নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস সেন্টার (UKMTO) জানায়, হামলায় ইটার্নিটি সি জাহাজটি “উল্লেখযোগ্য ক্ষতির মুখে পড়ে এবং চালনা শক্তি হারায়।”
যুক্তরাজ্যভিত্তিক নিরাপত্তা সংস্থা অ্যামব্রে জানায়, মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটি হোদেইদাহ উপকূলে ডুবে যায়।
এর আগে একই দিনে হুতিদের হামলায় ডুবে যায় আরও একটি মালবাহী জাহাজ—‘ম্যাজিক সিজ’। লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী এই জাহাজটিও ছিল গ্রিসের স্টেম শিপিং কোম্পানির মালিকানাধীন।
হুতির মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি নিশ্চিত করেন, গুলি, রকেট ও রিমোট-চালিত বিস্ফোরকবাহী নৌকা ব্যবহার করে হামলার পর ম্যাজিক সিজ পুরোপুরি ডুবে যায়। জাহাজটির হামলার অডিও ও ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ করেছে হুতি বিদ্রোহীরা।
তবে ম্যাজিক সিজ-এ থাকা সব ১৯ জন নাবিককে নিরাপদে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয় পাশ দিয়ে যাওয়া আরেকটি বাণিজ্যিক জাহাজ, যারা পরে জিবুতির দিকে রওনা দেয়।