ফেনী প্রতিনিধি:
ফেনীর উত্তরাঞ্চলে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা থেকে একযোগে ৮টি স্থানে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়ে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়। তীব্র গতিতে নদীর পানি বেড়িবাঁধ উপচে বিভিন্ন গ্রামে প্রবেশ করছে।
এই বন্যায় ফুলগাজী উপজেলার দেড়পাড়া, শ্রীপুর, মুন্সিরহাট, বরইয়া, নিলক্ষীসহ অন্তত ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফুলগাজী বাজারেও পানি ঢুকে পড়ায় দোকানপাট পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। একইভাবে পরশুরাম উপজেলার উত্তর ধনীকুন্ডা, মধ্যম ধনীকুন্ডা, রামপুর, দুর্গাপুর ও রতনপুরে ব্যাপক প্লাবন হয়েছে।
এছাড়া, পরশুরামের সীমান্তবর্তী বল্লামুখা এলাকায় ভারতের অংশে বাঁধ ভেঙে বাংলাদেশ অংশে পানি প্রবেশ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন। ফলে পরশুরাম সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আকতার হোসেন জানিয়েছেন, মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আবু সালেহ মোহাম্মদ মাহফুজুল হক জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফুলগাজী ও পরশুরামে ১৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। রাতেই শত শত মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হঠাৎ পানি ঢুকে পড়ায় অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে বের হতে পারেননি। অনেকেই রাতে ঘরে বসেই পানিবন্দি অবস্থায় ছিলেন। যাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছে তারা নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন।
এদিকে, টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে ফেনী শহরেরও বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কিছু এলাকায় পানি নামতে শুরু করলেও নিচু ঘরগুলো এখনো বসবাসের উপযোগী হয়ে ওঠেনি। এসব এলাকায় বসবাসকারীরা চরম দুর্ভোগে দিন ও রাত পার করছেন।