আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ফ্রান্সের রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ তুলেছে ফরাসি সামরিক ও গোয়েন্দা মহল। দাবি করা হচ্ছে, রাফালের বাজারমূল্য ধসিয়ে নিজেদের তৈরি যুদ্ধবিমান জে-১০সি’র বিক্রি বাড়াতেই এমন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে চীন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফরাসি সামরিক কর্মকর্তা আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এপি-কে জানিয়েছেন, চীনা দূতাবাসগুলো রাফাল কিনতে আগ্রহী বিভিন্ন দেশের নীতিনির্ধারকদের কাছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব ছড়াচ্ছে। মূলত দাসো এভিয়েশনের উৎপাদিত রাফাল যুদ্ধবিমানকে বিশ্ববাজারে প্রশ্নবিদ্ধ করে নিজেদের প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিতে চাইছে বেইজিং।
তবে এই অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছে চীন। বেইজিংয়ের দাবি, ফরাসি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং গুজবনির্ভর।
সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতে ভারতের তিনটি রাফাল জেট হারানোর খবর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দেয়। বিষয়টি স্বীকারও করেছে নয়াদিল্লি। এরপর থেকেই রাফালের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান দাসো এভিয়েশনের শেয়ারমূল্যে বড় ধরনের পতন লক্ষ্য করা যায়। বিপরীতে, চীনা নির্মিত ফাইটার জেট জে-১০সি’র শেয়ারদর উল্লম্ফন করে। এতে করে আন্তর্জাতিক সামরিক বিমানবাজারে প্রতিযোগিতা নতুন মোড় নেয়।
ফরাসি সেনা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা মনে করছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে রাফালের অংশগ্রহণ ও ক্ষয়ক্ষতির তথ্যকে বিকৃতভাবে প্রচার করে ভবিষ্যৎ ক্রেতা দেশগুলোকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা করছে চীন। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপীয় অঞ্চলের সম্ভাব্য ক্রেতাদের লক্ষ্য করে এই প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বহুমুখী অভিযানে সক্ষম মাল্টি-টার্গেটিং সিস্টেমযুক্ত ফোর পয়েন্ট ফাইভ জেনারেশনের রাফাল ফাইটার জেট বিশ্বব্যাপী একটি উচ্চমানের যুদ্ধবিমান হিসেবে বিবেচিত। ইতোমধ্যে ৫৩৩টি রাফাল বিক্রি করেছে ফ্রান্সের দাসো এভিয়েশন, যার মধ্যে ভারত, মিসর, কাতার, গ্রীস, ক্রোয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্রেতা রয়েছে।
ফ্রান্সের দাবি, রাফাল নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নেতিবাচক প্রচারণা সামরিক প্রযুক্তির নৈতিক বাণিজ্য নীতিমালার পরিপন্থী। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক যুদ্ধবিমান বাজারে এধরনের প্রোপাগান্ডা নতুন কিছু নয়।