ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম (এমপি আনার) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রথম চার্জশিট জমা দিয়েছে সিআইডি। ভারতের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, কোনো ঘটনার অভিযোগপত্র ৯০ দিনের মধ্যে তদন্তকারী সংস্থাকে দাখিল করতে হয়। সিআইডি ৮৭ দিনের মাথায় বারাসাত আদালতে প্রায় ১২০০ পাতার এই চার্জশিট পেশ করেছে।
চার্জশিটে দুই আসামি ‘কসাই’ জিহাদ হাওলাদার এবং মুহম্মদ সিয়ামের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, খুনের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সম্পর্কে চার্জশিটে কিছু বলা হয়নি। সিআইডি কর্মকর্তাদের মতে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত খুনের কারণ বলা সম্ভব নয়। এছাড়া মামলার মূল অভিযুক্তকে এখনও জেরা করা যায়নি।
গত ১২ মে কলকাতায় চিকিৎসার জন্য এসে নিখোঁজ হন এমপি আজীম। পরে ১৮ মে বরাহনগর থানায় তার নিখোঁজের অভিযোগ জমা পড়ে। তদন্তে নেমে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ এবং বরাহনগর থানা জানতে পারে, নিউ টাউনের একটি আবাসনে তাকে খুন করা হয়েছে। সিআইডি তদন্তের দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ২২ মে জিহাদকে গ্রেফতার করে। পরে সিয়ামকেও গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ আরও সাতজনকে গ্রেফতার করেছে, যাদের মধ্যে রয়েছে আমানুল্লাহ ওরফে শিমূল ভূঁইয়া, শেলাস্তি রহমান, ফয়জল, এবং মুস্তাফিজুর। তবে, মূল চক্রান্তকারী ও এমপির বন্ধু আখতারুজ্জামান শাহিন এখনও পলাতক। তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে আনার চেষ্টা চলছে।
জিহাদ ও সিয়ামকে গ্রেফতার করার পর, সিআইডি জানিয়েছিল যে অভিযুক্তরা এমপি আনারের দেহের মাংস ও হাড় পৃথক করে ফেলেছিল। মাংস ছোট ছোট খণ্ড করে কমোডের মাধ্যমে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেওয়া হয় এবং হাড় বাগজোলা খালে ফেলা হয়েছিল। হাড় উদ্ধার করা হলেও তা এমপিরই কি না, তা এখনও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি, কারণ ফরেনসিক রিপোর্ট আসেনি। সিআইডি আরও জানায়, ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য এমপির পরিবারের ডিএনএ নমুনা প্রয়োজন ছিল, তবে বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতির কারণে তারা এখনও কলকাতায় আসতে পারেননি।