গাজা, ২৪ মে:
ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনুসে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৩ মে) স্থানীয় সময় চালানো এই হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে প্রখ্যাত চিকিৎসক আলা আল-নাজ্জারের বাড়ি। এতে তার ১০ সন্তানের মধ্যে ৯ জনই নিহত হয়েছে। নিহত শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বড়টির বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর।
বিবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, হামলায় আল-নাজ্জারের স্বামী হামদি, যিনি নিজেও একজন চিকিৎসক, মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। তাদের ১১ বছর বয়সী একমাত্র বেঁচে যাওয়া ছেলে গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন। ব্রিটিশ সার্জন গ্রেম গ্রুম জানিয়েছেন, শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় দ্রুত অস্ত্রোপচার করা হয়।
নাসের হাসপাতালের বরাতে জানা গেছে, হামলার সময় পরিবারটি ঘরে অবস্থান করছিল। এই নির্মম ঘটনায় চিকিৎসক আলা আল-নাজ্জার এখন নিঃসন্তান, পরিবার প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত।
হামাস-শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মুনির আল-বুরশ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে ধ্বংসস্তূপ থেকে পুড়ে যাওয়া শিশুদের মরদেহ বের করা হচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই ঘটনাকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে অভিহিত করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হামলার পর ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) আনুষ্ঠানিকভাবে আল-নাজ্জার পরিবারের ওপর হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে শনিবার (২৪ মে) এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ১০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে তারা বিমান হামলা চালিয়েছে।
আলা আল-নাজ্জারের আত্মীয় ইউসুফ আল-নাজ্জার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “যথেষ্ট হয়েছে! আমাদের ওপর দয়া করুন! আমরা বিশ্ববাসীর কাছে আবেদন করছি—এই যুদ্ধ বন্ধ করুন। আমরা বাস্তুচ্যুত, অনাহারে ক্লান্ত।”
ব্রিটিশ সার্জন ভিক্টোরিয়া রোজের ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত এক ভিডিওতে গ্রেম গ্রুম বলেন, “এই হামলা অকল্পনীয় ও অমানবিক। আল-নাজ্জার পরিবার কোনো সামরিক বা রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। একটি চিকিৎসক পরিবারকে লক্ষ্যবস্তু করা চরম নিষ্ঠুরতা।”