অবরুদ্ধ গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বহু আবাসিক এলাকা। বিস্ফোরণের পর ছড়িয়ে পড়ে কালো ধোঁয়া ও ধুলার মেঘ, যার মাঝে অসহায় মানুষের আহাজারি যেন যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার চিত্র তুলে ধরে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা শনিবার (২৪ মে) এক প্রতিবেদনে জানায়, ইসরায়েল-হামাস চলমান সংঘাতের ১৯ মাসে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৫৩ হাজার ৮২২ জন ফিলিস্তিনি।
জাতিসংঘের দেওয়া সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গাজা উপত্যকার বাইরে অধিকৃত পশ্চিম তীরেও ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর নিপীড়ন বাড়ছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত পশ্চিম তীরে নিহত হয়েছেন ৯৩৮ জন ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে অন্তত ১৯৮ জন শিশু। এদের অনেকেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এবং উগ্র ইহুদি বসত স্থাপনকারীদের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন।
২০২৫ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পশ্চিম তীরে নিহত হয়েছেন আরও ১৩২ জন ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে রয়েছেন ২৫ জনেরও বেশি শিশু। শুধু হত্যাকাণ্ডই নয়, জানুয়ারি মাসে ইসরায়েলি বাহিনী পশ্চিম তীরের নূর শামস, তুলকারেম ও জেনিন শরণার্থী শিবিরে পরিচালিত ব্যাপক সামরিক অভিযানের ফলে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৪২ হাজার ফিলিস্তিনি। তাদের অনেকেই আজও নিজেদের ঘরে ফিরতে পারেননি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজার পাশাপাশি পশ্চিম তীরেও ফিলিস্তিনিদের জীবনযাত্রা প্রতিনিয়ত দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিন্দা এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিবাদ সত্ত্বেও ইসরায়েলের সামরিক নীতিতে কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, এই পরিস্থিতি শুধু একটি মানবিক বিপর্যয়ের প্রতীক নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতার ইঙ্গিত বহন করছে। যুদ্ধবিরতির কোনো বাস্তবিক অগ্রগতি না থাকায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ দিনকে দিন বাড়ছেই।