মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে ২৪ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য পরিচালনার অভিযোগে চার সাবেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই চক্রটি দেড় বছরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অর্থ লেনদেন করেছে বলে জানা গেছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, উপপরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হুদার নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি এই অভিযোগ অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে একটি সারসংক্ষেপও প্রস্তুত করেছে দুদক।
তদন্তাধীন সাবেক সংসদ সদস্যরা হলেন ফেনী-২ আসনের নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী-৩ আসনের লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, ঢাকা-২০ আসনের বেনজীর আহমেদ এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। অভিযোগ রয়েছে, এই চক্রের অধীনে তাঁরা মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ আদান-প্রদান করেছেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রতিষ্ঠান স্নিগ্ধা ওভারসিজ লিমিটেড মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে যোগদানের পর দেড় বছরে ৮ হাজার কর্মী প্রেরণ করেছে। মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান ফাইভ এম ইন্টারন্যাশনাল ৮ হাজার ৫৯২ কর্মী পাঠিয়েছে, যা তাদেরকে শীর্ষে স্থান দিয়েছে। বেনজীর আহমেদের আহমেদ ইন্টারন্যাশনাল ৭ হাজার ৮৪৯ কর্মী প্রেরণ করেছে এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামালের পরিবারের প্রতিষ্ঠানগুলো মোট ৯ হাজার ৮৬১ কর্মী পাঠিয়েছে।
দুদকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সরকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ খরচ ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা হলেও, একজন কর্মীর গড় খরচ হয়েছে ৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। দেড় বছরে সাড়ে চার লাখের মতো কর্মী পাঠিয়ে ২৪ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য করা হয়েছে, যার মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ফি হিসেবে আদায় করা হয়েছে।
এই চক্রের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে দুদক তদন্ত চালাচ্ছে, তবে মূল হোতা হিসেবে পরিচিত রুহুল আমিন ওরফে স্বপনের নাম দুদকের সারসংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়নি।