ঢাকা, ১৮ আগস্ট ২০২৪: শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে পুলিশ বাহিনীতে মহাক্ষমতায় থাকা এবং অতি-দলবাজ হিসেবে চিহ্নিত কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তারা চাকরি হারানো ছাড়াও মামলা, গ্রেপ্তার এবং জনরোষের ভয়েও রয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার সব পুলিশ সদস্যকে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেক চিহ্নিত কর্মকর্তা এখনো কর্মস্থলে যোগ দেননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সরকারের পতনের শেষ সময় পর্যন্ত এসব কর্মকর্তার কেউ কেউ অতি-উৎসাহী ভূমিকায় ছিলেন। ছাত্র-জনতাকে দমন করার জন্য তারা মাঠ পুলিশকে নানা নির্দেশনা দিচ্ছিলেন। তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবরের পর তারা আত্মগোপনে চলে যান।
পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র বলছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দলবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে। ইতিমধ্যে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম এবং ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমানকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল বাতেন ও রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানকেও চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আরও বেশ কিছু কর্মকর্তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে পুলিশের সব সদস্যকে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলেও উল্লেখযোগ্য কিছু কর্মকর্তা তখনো কর্মস্থলে যোগ দেননি। তাদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপারেশন্স) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এবং ডিবির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। এ ছাড়া পুলিশের আরও কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এখনো কর্মস্থলে যোগ দেননি বলে জানা গেছে।
সরকারের নির্দেশনা মেনে অনেক পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন, তবে চিহ্নিত অনেক কর্মকর্তাকে এখনও কর্মস্থলে দেখা যাচ্ছে না। তাদের মধ্যে কিছু কর্মকর্তা অধীনস্থদের রোষানলে পড়েছেন এবং এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, শেখ হাসিনা সরকারের আস্থাভাজন হিসেবে চিহ্নিত অনেক পুলিশ কর্মকর্তা কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার পরও আতঙ্কে রয়েছেন। তারা কর্মস্থলে উপস্থিত থাকলেও কোণঠাসা অবস্থায় আছেন এবং কোনো অপারেশনাল কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ করছেন না।
এই পরিস্থিতিতে, পুলিশ বাহিনীতে অস্থিরতা বিরাজ করছে এবং সরকারের নির্দেশনার পরও চিহ্নিত কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা অব্যাহত রয়েছে।
যদি কোনো সংশোধন বা সংযোজন প্রয়োজন হয়, দয়া করে জানাবেন।