ঢাকা, ১৮ আগস্ট ২০২৪: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে পড়ে পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার দেশত্যাগের পর অনেক নেতাকর্মী আত্মগোপনে চলে যান এবং কেউ কেউ দেশত্যাগও করেন। অন্যদিকে, নিরাপত্তার জন্য বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যক্তিত্ব সেনা হেফাজতে আশ্রয় নেন। এ বিষয়ে সম্প্রতি আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে।
রোববার (১৮ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর জানায়, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটে। এ সময় প্রাণনাশের আশঙ্কায় বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ অনেক নাগরিক সেনানিবাসে আশ্রয় প্রার্থনা করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড রোধ, জীবন রক্ষা এবং আইনের শাসন সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সেনাবাহিনী ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ৫ জন বিচারক, ১৯ জন অসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ২৮ জন পুলিশ অফিসার, ৪৮৭ জন পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ ১২ জন এবং ৫১ জন পরিবারের সদস্যসহ সর্বমোট ৬২৬ জনকে আশ্রয় প্রদান করেছে।
পরিস্থিতির উন্নতি সাপেক্ষে, ৬১৫ জন স্ব-উদ্যোগে সেনানিবাস ত্যাগ করেছেন। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আশ্রয়প্রাপ্তদের মধ্যে ৪ জনকে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে ৩ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও তাদের পরিবারের ৪ জন সদস্যসহ মোট ৭ জন সেনানিবাসে অবস্থান করছেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব তথ্যাদি সরবরাহ করা হয়েছে।
আইএসপিআরের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে এবং দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের পাশাপাশি বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড রোধ ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সবাইকে গুজবে কান না দিয়ে ধৈর্যশীল ও সহযোগী মনোভাব প্রদর্শন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা জনসাধারণের পাশে ছিল এবং থাকবে।