সুন্দরবনের শিবসা নদীর পূর্ব তীরের কেওড়াতলা এলাকায় বন বিভাগের বিশেষ টহল দল এক অভিযানে হরিণের চারটি মাথা ও ৬০ কেজি মাংস উদ্ধার করেছে। গতকাল বুধবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় শিকারিরা বনরক্ষীদের উপস্থিতি টের পেয়ে নৌকা ফেলে পালিয়ে যায়, ফলে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
টহল দলের প্রধান সাবিত মাহমুদ জানান, শিবসা নদী দিয়ে কেওড়াতলার কাছে পৌঁছে ভোরবেলা বেশ কিছু জেলে নৌকা দেখতে পান তাঁরা। বৈধ অনুমতিপত্র যাচাই করার সময় একটি ফাঁকা নৌকা দেখে সন্দেহ হলে তা তল্লাশি করা হয়। সেখানেই বরফে রাখা অবস্থায় হরিণের মাংস ও মাথাগুলো পাওয়া যায়। অভিযানে আদাচাই টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমানও অংশ নেন। জব্দকৃত মাংস ও মাথা আদালতে পাঠানো হলে নির্দেশ অনুযায়ী দুপুরে সেগুলো মাটিচাপা দেওয়া হয়।
এর আগে ১৭ এপ্রিল মোংলার জয়মনিরঘোল এলাকা থেকে কোস্টগার্ড ৩১ কেজি হরিণের মাংস, একটি মাথা ও চারটি পা উদ্ধার করেছিল। গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত কোস্টগার্ডের অভিযানে প্রায় ৬০০ কেজি হরিণের মাংস, ৮টি চামড়া, ২০০টির বেশি ফাঁদ এবং ২০ জন শিকারি আটক হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম উল হক।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, চোরা শিকারিরা জেলের ছদ্মবেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করে দড়ির ফাঁদ ব্যবহার করে হরিণ ধরে। ফাঁদে আটকে পড়া হরিণকে জবাই করে তারা গোপনে মাংস লোকালয়ে পাচার করে বিক্রি করে থাকে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাছানুর রহমান জানান, হরিণ শিকার বন্ধে বন বিভাগ ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। শিকারিদের তথ্য দিলে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। তবে শিকার ও পাচার বন্ধে স্থানীয় জনগণের সক্রিয় সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।