জেরুজালেম, ১৯ এপ্রিল ২০২৫:
ফিলিস্তিন সরকার এক গভীর উদ্বেগজনক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, দখলদার ইসরাইলি সেটেলার তথা অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরা জেরুজালেমে অবস্থিত মুসলিম বিশ্বের তৃতীয় পবিত্র স্থান এবং ইসলামের প্রথম কিবলা আল-আকসা মসজিদ ধ্বংস করে তার স্থানে একটি ইহুদি ‘টেম্পল’ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদন অনুসারে, ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র ও প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে— হিব্রু ভাষার বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ও প্ল্যাটফর্মে ইসরাইলি সেটেলার সংগঠনগুলো আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, যেখানে তারা সরাসরি আল-আকসা মসজিদে হামলা চালিয়ে সেটিকে ধ্বংস করার পর সেখানে তথাকথিত ‘থার্ড টেম্পল’ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে।
এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এক পোস্টে ফিলিস্তিনি মন্ত্রণালয় জানায়,
> “আল-আকসা মসজিদ ধ্বংসের পরিকল্পনাকে আমরা অধিকৃত জেরুজালেমে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের পবিত্র স্থানের বিরুদ্ধে একটি সুপরিকল্পিত উস্কানি হিসেবে বিবেচনা করি।”
এছাড়া, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতি এই ইস্যুকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইহুদি ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, জেরুজালেমের টেম্পল মাউন্ট-এ (যেখানে বর্তমানে আল-আকসা মসজিদ অবস্থিত) তাদের দুইটি প্রাচীন টেম্পল ছিল— ‘ফার্স্ট টেম্পল’ নির্মাণ করেছিলেন রাজা সলোমন (হজরত সুলাইমান আ.) প্রায় ৩,০০০ বছর আগে। এটি ব্যাবিলনীয়রা ধ্বংস করে। পরবর্তীতে ‘সেকেন্ড টেম্পল’ নির্মাণ হলেও সেটিও ধ্বংস হয় রোমানদের হাতে। এখন তারা সেখানে তৃতীয় টেম্পল নির্মাণের দাবি করছে।
তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী, এখানেই নবী ইব্রাহিম (আ.) তার পুত্র ইসমাইল (আ.) কে কোরবানির জন্য নিয়ে এসেছিলেন, যা ইসলামিক ইতিহাস ও বিশ্বাস অনুযায়ীও গুরুত্বপূর্ণ। তবে আল-আকসা শুধুমাত্র মুসলমানদের উপাসনাস্থল, যেখানে অন্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় আচার পালনের অনুমতি নেই।
বর্তমানে ইসরাইলি সেটেলাররা প্রায় নিয়মিতভাবেই আল-আকসা মসজিদ চত্বরে অনধিকার প্রবেশ করছে এবং ধর্মীয় আচার পালন করছে, যা জেরুজালেমের স্থিতাবস্থা চুক্তি লঙ্ঘনের শামিল। ১৯৬৭ সালে ইসরাইল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেওয়ার পর চুক্তি অনুযায়ী, অমুসলিমদের প্রবেশাধিকার থাকলেও, প্রার্থনার অনুমতি নেই।
কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহায়তায় সেটেলাররা নিয়মিত মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে ধর্মীয় আচার পালন করছে। গত সপ্তাহেও এমন একটি ঘটনায় কয়েক ডজন ইসরাইলি সেটেলার জোরপূর্বক আল-আকসায় ঢুকে প্রার্থনা করেছে।