ঢাকা, ১৫ এপ্রিল ২০২৫: রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা দুটি আলাদা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব আজ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। আদালত এদিন দুদকের দেয়া চার্জশিট আমলে নিয়ে, পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন।
দুদকের দায়েরকৃত দুটি মামলার একটিতে ১২ জন ও অন্যটিতে ১৭ জন আসামি রয়েছেন। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—
জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূর্ণবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং শরীফ আহমেদ।
তবে অন্য মামলার ১২ আসামির নাম এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, পূর্বাচল আবাসিক প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রোডে ৬টি প্লটের অনিয়মিত বরাদ্দের প্রমাণ মিলেছে। বরাদ্দের জন্য কোনো আবেদন না করেই শেখ হাসিনা ১০ কাঠার একটি প্লট পেয়েছেন বলে অভিযোগে বলা হয়। হলফনামাতেও প্লটের কোনো উল্লেখ ছিল না।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে দুদক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি দায়ের করে এবং মার্চে তদন্ত শেষে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে আরও ৭টি মামলা দায়ের করা হয় শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এবং সরকারি উচ্চপদস্থ ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
এ সকল মামলায় দণ্ডবিধির ১৬১/১৬৩/১৬৪/৪০৯/১০৯ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
ছাত্র ও জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে গত ৫ আগস্ট দেশত্যাগ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, “যেহেতু আসামিরা কেউই আদালতে হাজির হননি, তাই আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।”