মাহিন্দ্রার উপর রেইনট্রি গাছ পড়ে দুইজন আহত, মহাসড়কে তিন ঘণ্টা যানজট
পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলায় আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার রাজাখালী ও চরবয়ড়া এলাকায় প্রবল কালবৈশাখী ঝড়ে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয় এবং সহস্রাধিক গাছ উপড়ে পড়ে। এই ঘটনায় গাছ চাপায় দুইজন আহত হয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটে দুপুর আনুমানিক দুইটার দিকে, যখন ঝড় শুরু হয়। দুমকী-বগা-বাউফল মহাসড়কের রাজাখালী ফার্মগেট এলাকার পশ্চিম পাশে একটি মাহিন্দ্রা গাড়ি যাত্রীসহ গাছের নিচে আশ্রয় নেয়। ঝড়ের তাণ্ডবে হঠাৎ একটি বড় রেইনট্রি গাছ উপড়ে পড়ে সেই মাহিন্দ্রার উপর। এতে ড্রাইভার হানিফ হাওলাদার (৩৫) এবং এক যাত্রী মারাত্মকভাবে আহত হন।
দুর্ঘটনার পর স্থানীয় জনগণ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়। গাছটি রাস্তার ওপর পড়ায় দু’পাশে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর গাছ অপসারণ করে যান চলাচল স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়।
ঘটনার বিষয়ে দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন জানান, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং স্থানীয়দের সহায়তায় দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা পরিচালনা করি। রাস্তার উপর পড়ে থাকা গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজাখালী ও চরবয়ড়া এলাকায় প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ির ছাউনি উড়ে গেছে কিংবা বিধ্বস্ত হয়েছে। বহু পরিবার বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে। পাশাপাশি হাজারের বেশি গাছ উপড়ে পড়ায় ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
ঝড়ের সময় রাজাখালী এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, “ঝড়টি হঠাৎ করে শুরু হয়। আকাশ কালো হয়ে আসে এবং বিশাল শব্দ করে গাছপালা উপড়ে যেতে থাকে। আমরা অনেকেই ঘরের বাইরে ছিলাম, প্রাণে বেঁচে গেছি বলতে গেলে।”
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর বাসিন্দারা দ্রুত সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন। খাদ্য, পানীয়, চিকিৎসা ও বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
পটুয়াখালীর দুমকীতে আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড় বড় ধরনের মানবিক ও অবকাঠামোগত সংকটের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সমন্বিত প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের বিষয়টিও এখন জরুরি হয়ে উঠেছে।