ঢাকা, শুক্রবার: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু নেতাদের অতীতের ক্ষোভ ও অভিযোগ ভুলে ভবিষ্যতের দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আসুন, আমরা অতীতকে ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে যাই এবং একটি বৈষম্যহীন, মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তুলি।”
আজ সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের তিনটি সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে মির্জা ফখরুল এ আহ্বান জানান। বৈঠকে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ, এবং ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিএনপিপন্থী সংখ্যালঘুদের সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের নেতারাও এ বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠকের পর বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, “বিএনপি মহাসচিবের এই আহ্বানকে আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। আমরা একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে কাজ করতে চাই।”
বৈঠকে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে আট দফা দাবি তুলে ধরা হয় এবং বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তা বিবেচনা করার আশ্বাস দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক সন্তোষ শর্মা বলেন, “আমরা একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনে সবাই মিলে কাজ করতে চাই।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “কিছু দুষ্কৃতকারী—যারা কোনো রাজনৈতিক দলের নয়, বরং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায়, তারা যতই চেষ্টা করুক, বাংলাদেশের দীর্ঘকালের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য নষ্ট করতে পারবে না। আমাদের অঙ্গীকার, আমরা একটি রেইনবো স্টেট নির্মাণ করতে চাই যেখানে সকল ধর্ম-গোত্র-বর্ণনির্বিশেষে সবাই মিলেমিশে বসবাস করবে।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি ভিডিও বার্তার উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের রক্ষায় তারেক রহমানের বার্তা হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের মধ্যে গভীর প্রশংসা অর্জন করেছে। ১৯৭১ সালের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেতনা পুনরুদ্ধার করতে ২০২৪ সালের বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সেই সুযোগ এসেছে।”
বৈঠকে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকারসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।