মাগুরায় পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করা শিশুটির পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। রোববার (১৬ মার্চ) দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান এক ফেসবুক পোস্টে এ ঘোষণা দেন।
তিনি লিখেছেন, “মাগুরার শিশুর পরিবার অত্যন্ত অসহায়। তার বাবা একজন মানসিক রোগী, আর পরিবারে কোনো পুরুষ সদস্য নেই। মানবিক দিক বিবেচনায় আমরা মহান আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে এই পরিবারের দায়িত্ব নিচ্ছি।”
জামায়াত আমির আরও জানান, “ইতোমধ্যে শিশুটির পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। সবাই দোয়া করবেন, যেন আল্লাহ আমাদের এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করেন।”
বড় বোনের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। অবশেষে গত ৮ মার্চ সন্ধ্যায় তাকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয় এবং ১৩ মার্চ সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।
ঐদিন রাতেই শিশুটির নিজ গ্রাম শ্রীপুরের সোনাইকুন্ডীতে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।
গত শনিবার (১৫ মার্চ) শিশুটির বাড়িতে যান জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি সোনাইকুন্ডি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শিশুটির রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিলে অংশ নেন।
এসময় তিনি বলেন, “আমরা শিশুটির হত্যার দ্রুত বিচার চাই। সমাজে নোংরা অপসংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়েছে, যা নানা অসঙ্গতির জন্ম দিচ্ছে। এ অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী সবসময় নৈরাজ্য ও অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।”
এই মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। সাধারণ মানুষ দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত ও শাস্তির আহ্বান জানিয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সামাজিক সচেতনতা ও কঠোর আইন প্রয়োগ জরুরি। একইসঙ্গে এ ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।