তদন্তে দ্রুত অগ্রগতি ও আইনের কঠোর প্রয়োগ
মাগুরায় এক শিশুর ধর্ষণ ও পরবর্তী মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি (উপমহাপরিদর্শক) মো. রেজাউল হক আশ্বাস দিয়েছেন যে, এই মামলার তদন্ত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে শ্রীপুর উপজেলায় শিশুটির দাফন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।
ডিআইজি রেজাউল হক বলেন, ‘আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আমাদের ওপর আস্থা রাখবেন। মূল অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের দায়িত্ব হচ্ছে সুষ্ঠু তদন্ত করা, এবং সেই তদন্তের কাজটি দ্রুততার সঙ্গে শেষ করা হবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং আইজিপি ব্যক্তিগতভাবে এই ঘটনার খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ডিআইজি। তিনি আরও বলেন, ‘মামলার তদন্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে ডিএনএ ম্যাচিং। আমরা চেষ্টা করছি এটি দ্রুত সম্পন্ন করতে। বাংলাদেশ পুলিশের জন্য এটি হায়েস্ট প্রায়োরিটি (সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার)। রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে আমি নিজেও তদন্তের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত আছি।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সিআইডিতে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের ডিএনএ নমুনা পাঠানো হয়েছে। আজকেও সেখানে কথা বলেছি। সংশ্লিষ্ট সবাই গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরপরই মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া সম্ভব হবে।’
মামলাটির তদন্তে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে। তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম, মাগুরা সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর সাফিন আল সাইফ, পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সামরিক বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে শিশুটির মরদেহ মাগুরায় আনা হয়। হেলিকপ্টারে শিশুটির মা এবং মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ছিলেন। পাশাপাশি, জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক আলাদা হেলিকপ্টারে মাগুরায় আসেন এবং নোমানী ময়দানে অনুষ্ঠিত প্রথম জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।
এরপর রাত ৮টা ২০ মিনিটে শ্রীপুর উপজেলায় শিশুটির দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং রাত ৯টার দিকে তাকে দাফন করা হয়।
এই মর্মান্তিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে ন্যায়বিচারের দাবি জোরালো হয়েছে। দেশের প্রতিটি মানুষ এই ঘটনার সুষ্ঠু ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।