ঢাকা: রাজধানীর গুলশান-২ এলাকার ৭১ নম্বর রোডে ব্রিটিশ এমপি ও শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের একটি ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ফ্ল্যাটটি গোপন করতে নানা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
দুদকের তদন্ত অনুযায়ী, ইস্টার্ন হাউজিং থেকে পাওয়া এই ফ্ল্যাটটি ২০১৫ সাল পর্যন্ত আয়কর নথিতে প্রদর্শন করলেও পরবর্তী সময়ে টিউলিপ সিদ্দিক আয়কর নথিতে এর তথ্য গোপন করেন। তিনি একটি ভুয়া নোটারি রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ফ্ল্যাটটি ছোট বোন আজমিনা সিদ্দিকের নামে হস্তান্তর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, পূর্বাচলে প্লট জালিয়াতির ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের সাত সদস্যের বিরুদ্ধে ছয়টি দুর্নীতি মামলার চার্জশিটের অনুমোদন দিয়েছে দুদক। সোমবার (১০ মার্চ) সংস্থাটি জানায়, এই মামলাগুলোতে ২৩ জনকে আসামি করা হয়েছে, যার মধ্যে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রয়েছেন।
দুদকের তদন্তে জানা গেছে, ২০২২ সালে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প থেকে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা ১০ কাঠার ছয়টি প্লট বরাদ্দ নেন। যদিও রাজধানীতে তাদের আগে থেকেই প্লট ছিল। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে এসব প্লট গ্রহণ করায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা দায়ের করে দুদক। দুই মাসের তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় চার্জশিটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, শিগগিরই চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হবে এবং আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৫ আগস্ট-পটপরিবর্তনের পর এবারই প্রথম দুর্নীতির মামলায় বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা, টিউলিপ সিদ্দিকসহ পরিবারের সাতজন সদস্য। দুদক বলছে, ফ্ল্যাট ও প্লটসংক্রান্ত এই অনিয়মের মামলাগুলোতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং দুর্নীতি দমন আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই মামলার ফলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মোড় আসতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। আগামী দিনে কীভাবে মামলার বিচার কার্যক্রম এগোয়, তা এখন সময়ের অপেক্ষা।