ঢাকা, ২১ ফেব্রুয়ারি: ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়ম ও ভোট কারচুপির অভিযোগে জড়িত ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্টদের শাস্তিস্বরূপ ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করা হচ্ছে বা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বিগত তিনটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে প্রশাসনের নির্দিষ্ট কিছু কর্মকর্তা সরাসরি ভূমিকা রেখেছিলেন। বিশেষ করে ভোট কারচুপির অভিযোগে অভিযুক্ত ডিসি ও এসপিদের বিরুদ্ধে নানা মহল থেকে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠছিল। এবার সরকার সেই দাবির প্রতি সাড়া দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সরকারি সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ৬৪ জেলার ডিসি ও এসপিদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে নির্ভরযোগ্য তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে, তাদের ওএসডি করা হচ্ছে এবং কারও ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা জানান, “নিরপেক্ষ প্রশাসন গঠনের লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে প্রশাসনের বিতর্কিত ব্যক্তিদের সরিয়ে দেওয়া জরুরি ছিল।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের এই পদক্ষেপ দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে কিছু মহল একে প্রতিহিংসামূলক আচরণ বলেও আখ্যা দিচ্ছে।
জনমত জরিপেও দেখা গেছে, সাধারণ জনগণ চাইছে প্রশাসনের দুর্নীতিগ্রস্ত ও পক্ষপাতদুষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করা যায়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শুধু প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াই যথেষ্ট নয়; নির্বাচন ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ করতে আরও নীতি-সংস্কারের প্রয়োজন। সরকার ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠনের বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে আগামী জাতীয় নির্বাচনগুলোতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক কমবে এবং জনগণের আস্থা ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।