ঢাকা, [তারিখ] – তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি সই করে ভারতকে প্রকৃত বন্ধুত্বের প্রমাণ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই বিষয়টি বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে।
সূত্র জানায়, বৈঠকে তৌহিদ হোসেন ভারতের প্রতি আহ্বান জানান, দুই দেশের সুসম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে এবং দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত তিস্তা চুক্তির জট খুলতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, “ভারত যদি তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর করে, তবে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও উচ্চতায় পৌঁছাবে এবং জনগণের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি পাবে।”
বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আশ্বস্ত করে বলেন, “বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আগের মতোই মজবুত রয়েছে, এটি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। তবে, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।”
তবে দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে তিস্তা চুক্তি কার্যকর না হওয়ায় বাংলাদেশে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বাড়ছে। তিস্তার পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে একাধিকবার আলোচনার কথা উঠলেও কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিস্তা নিয়ে সক্রিয় হয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি জানিয়েছেন, “তিস্তা চুক্তির অমীমাংসিত দিকগুলো নিরসনে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা জোরদার করা হবে।”
এদিকে, তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও মেগা প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে সম্প্রতি গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছেন আন্দোলনকারীরা। তারা সরাসরি নদীতে নেমে ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানান।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের কৃষি, পরিবেশ এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিশেষজ্ঞদের মতে, “এটি কেবল পানি সমস্যার সমাধান নয়, বরং দুই দেশের মধ্যকার আস্থার একটি বড় পরীক্ষা।”