ঢাকা, ১৮ ফেব্রুয়ারি: পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্যের ভিত্তিতে নতুন পাসপোর্ট ইস্যুর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের প্রস্তাবিত সারসংক্ষেপ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) অনুমোদনের পর এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে যাচ্ছে।
সরকারি সূত্র জানায়, নতুন এ নীতিমালা কার্যকর হলে সাধারণ আবেদনকারীদের জন্য পাসপোর্ট প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত হবে। পুলিশ ভেরিফিকেশন জটিলতা দূর হওয়ায় বিদেশগামীদের সময় ও খরচ কমবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, অনলাইনে যাচাই করা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের ভিত্তিতেই সাধারণ আবেদনকারীদের পাসপোর্ট দেওয়া হবে। বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সনদ যাচাই করেই পাসপোর্ট ইস্যু করা হবে। ফলে পুলিশি প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন থাকবে না।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিসে গড়ে ২৮-৩০ হাজার আবেদন জমা পড়ে, আর ২৫-২৮ হাজার পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার বাংলাদেশি কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বিদেশে যান। উচ্চশিক্ষা, স্থায়ীভাবে বসবাসসহ নানা কারণে বাংলাদেশিরা পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় আবেদনকারীরা নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছিলেন।
বর্তমানে ই-পাসপোর্টের জন্য ঘরে বসেই অনলাইনে আবেদন করা এবং ফি পরিশোধ করা যায়। এরপর নির্ধারিত দিনে বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানের জন্য আবেদনকারীদের পাসপোর্ট অফিসে যেতে হয়। আগে এই আবেদন স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুলিশের বিশেষ শাখায় (SB) যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হতো, যা সময়সাপেক্ষ ছিল। নতুন নির্দেশনার ফলে এখন আর পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হবে না।
সারসংক্ষেপে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্রের সুসংগঠিত ও নির্ভরযোগ্য ডেটাবেইস রয়েছে। এই ডেটাবেইসের সঙ্গে আবেদনকারীর তথ্য মিললেই পাসপোর্ট ইস্যু করা হবে। অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সনদের তথ্য যাচাই করে পাসপোর্ট দেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নতুন এ সিদ্ধান্ত পাসপোর্ট প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত এবং নাগরিকবান্ধব করবে। আবেদনকারীদের জন্য এটি সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ী হবে। পাশাপাশি, দুর্নীতি ও অনিয়মের সুযোগও কমে আসবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শিগগিরই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক পরিপত্র জারি করবে, যা কার্যকর হওয়ার পরপরই আবেদনকারীরা সুবিধা পেতে শুরু করবেন।