কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভার নশরথপুর মধ্যপাড়ার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব শ্রীমতি বেগম। স্বামী পরিত্যক্তা ও নিঃসন্তান এই বৃদ্ধা একসময় মানুষের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। তবে বয়সের ভার এবং শারীরিক অসুস্থতার কারণে বর্তমানে ভিক্ষাবৃত্তির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু কষ্টের এই জীবনেও তিনি যে মহানুভবতার অনন্য নজির স্থাপন করেছেন, তা দেখে বিস্মিত পুরো গ্রাম।
সম্প্রতি দীর্ঘদিন ধরে ভিক্ষা করে জমানো ৪০ হাজার টাকা মসজিদের উন্নয়নের জন্য দান করেছেন শ্রীমতি বেগম। প্রতিদিন সামান্য আয় থেকে কিছু টাকা আলাদা করে জমিয়ে তিনি এই বিপুল অর্থ সংগ্রহ করেন। মসজিদে টাকা দান করার সময় তিনি বলেন, “এটি আমার মা-বাবার আত্মার শান্তির জন্য, আমি আল্লাহর ঘরে দান করলাম।”
শ্রীমতি বেগমের এমন ত্যাগের গল্প জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তার মতো একজন বৃদ্ধা, যিনি নিজেই দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করছেন, তিনি এত টাকা দান করতে পারেন—এটি ভাবতে অবাক হয়েছেন অনেকেই। গ্রামের মানুষ তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন এবং তার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন।
শ্রীমতি বেগমের এই দান সমাজে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। যেখানে অনেক বিত্তশালী ব্যক্তি দানের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকেন, সেখানে এক বৃদ্ধা নিজের সীমিত উপার্জন থেকে মসজিদের জন্য এত বড় অঙ্কের টাকা দান করেছেন। এটি সমাজের অন্যান্যদের জন্যও অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে।
এত বড় দান করলেও শ্রীমতি বেগম নিজে অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। ঝুপড়ি ঘরে বাস করা এই বৃদ্ধার নেই স্থায়ী কোনো আশ্রয়, নেই নিয়মিত খাদ্যের নিশ্চয়তা। সমাজের বিত্তবানদের উচিত তার মতো দয়ালু ও মহৎপ্রাণ ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ানো, যেন তিনি একটু স্বস্তির জীবন কাটাতে পারেন।