৫ আগস্ট এবং ১৫ আগস্টের পর আবারও এক উত্তাল রাত দেখলো দেশবাসী। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাসভবন গুঁড়িয়ে ফেলার ঘোষণার পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার ব্যানারে “লংমার্চ টু ধানমন্ডি ৩২” কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। রাতের মধ্যেই পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে।
ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বিক্ষোভকারীরা জানান, দেশকে আবারও অস্থিতিশীল করার চেষ্টা যেন কোনোভাবেই সফল না হয়। এদিকে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বাসভবন ধানমন্ডি ৫ নম্বরের সুধাসদনে আগুন দেয়ার ঘটনায় উত্তাপ আরও বেড়ে যায়।
রাত নয়টায় আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার ভাষণের সময়ই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়ার প্রসঙ্গে সামাজিক মাধ্যমগুলো সরগরম হয়ে ওঠে। তবে সন্ধ্যা থেকেই ধানমন্ডি এলাকায় ছাত্র-জনতার ভিড় বাড়তে থাকে। শাহবাগ থেকে একটি মিছিল ধানমন্ডির দিকে এগোতে থাকে, যেখানে অনেককে উল্লাস করতে দেখা যায়। হাজার হাজার মানুষ এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দেন।
বিক্ষোভকারীরা বুলডোজার ও ক্রেনের অপেক্ষায় থাকেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি ভাঙার জন্য। রাত পৌনে এগারোটার দিকে শুরু হয় ভাঙার কাজ। রাতভর চলে এই কার্যক্রম, এবং ভোর থেকে আবারও শুরু হয় বাড়িটি সম্পূর্ণভাবে গুঁড়িয়ে ফেলার কাজ।
এ বিষয়ে এক বিক্ষোভকারী বলেন, “এই ক্ষোভ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। আমরা দেশের জনগণকে বলতে চাই, ফ্যাসিবাদকে আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেয়া হবে না। তারা যতই লম্ফঝম্ফ করুক, ছাত্রসমাজ তাদের প্রতিহত করতে রাস্তায় রয়েছে।” আরেকজন বলেন, “আমরা ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের প্রতীক ধ্বংস করছি। এই বাসভবন থেকেই বাকশাল গঠনের ঘোষণা এসেছিল। এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা বার্তা দিতে চাই, ভবিষ্যতে যারাই ফ্যাসিবাদী চর্চা করবে, তাদের পরিণতিও একই হবে।”
এই ঘটনায় রাজধানীবাসী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসা ভাঙার ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ আন্দোলন কতদূর এগোবে, তা এখনই দেখার অপেক্ষায় দেশবাসী।