নিজস্ব প্রতিবেদক:
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের নামে জন্মহার কমাতে গিয়ে ভবিষ্যতে ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়তে পারে বাংলাদেশসহ অনেক দেশ। আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি—যুবসমাজের ঘাটতি তৈরি হবে, ফলে দেশ পরিচালনায় দক্ষ কর্মী পাওয়া কঠিন হয়ে উঠবে। সম্প্রতি এক প্রশ্নোত্তর পর্বে জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ এমনই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ইতালিসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে জনসংখ্যার ঘাটতির কারণে শ্রমশক্তির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক দেশেই জন্মহার এত কম যে, ভবিষ্যতে তাদের অর্থনীতি টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়ে যাবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এখন উন্নত দেশগুলো জনগণকে বেশি সন্তান নিতে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছে।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, “এক সময় পশ্চিমারা বলেছিল—‘ছেলে হোক বা মেয়ে হোক, দুটি সন্তানই যথেষ্ট।’ এখন তারাই সন্তান জন্ম নিলে নগদ পুরস্কার দিচ্ছে। কেউ এক সন্তান নিলে ২০০ ডলার, দুই সন্তান নিলে ৫০০ ডলার, তিনজন হলে আরও বেশি প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, পশ্চিমারা যখন তাদের ভুল বুঝতে পেরে জন্মহার বাড়ানোর চেষ্টা করছে, তখন বাংলাদেশসহ অনেক দেশ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের নীতি অনুসরণ করছে, যা ভবিষ্যতে ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে।
শুধু জনসংখ্যা সংকটই নয়, সমাজের আরও কিছু বিধ্বংসী মতাদর্শ নিয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে ট্রান্সজেন্ডার ও সমকামিতার মতো মতবাদকে অনুমোদন দেওয়াকে তিনি সমাজের অবক্ষয়ের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, “পশ্চিমা সমাজ এখন তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। তাদের অভিভাবকরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছে। ইলন মাস্কের মতো ব্যক্তি পর্যন্ত বলেছেন যে, তার সন্তানকে ট্রান্সজেন্ডার মতবাদের মাধ্যমে মানসিকভাবে হত্যা করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, ইলন মাস্ক এখন সমাজ সংস্কারের লক্ষ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন দিচ্ছেন এবং মার্কিন রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন।
শায়খ আহমাদুল্লাহ আহ্বান জানান, বাংলাদেশসহ মুসলিম দেশগুলোর উচিত পশ্চিমাদের থেকে সঠিক শিক্ষা নেওয়া। তিনি বলেন, “তাদের ভালো দিকগুলো গ্রহণ করতে হবে, কিন্তু অন্ধভাবে অনুসরণ করা যাবে না। না হলে আমরাও একই বিপর্যয়ের মুখে পড়ব।”
তিনি অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা যেন ধ্বংস হওয়ার আগে শিক্ষা নিতে পারি। সন্তান লালন-পালন ও পরিবার গঠনের বিষয়ে ইসলামি মূল্যবোধ অনুসরণ করলেই সুস্থ ও স্থিতিশীল সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।”