বগুড়া, ১৬ আগস্ট ২০২৪: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণের সময় বগুড়ার সাতমাথায় নিহত শিক্ষক সেলিম হোসেনের ঘটনায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ১০১ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত সেলিম হোসেনের বাবা সেকেন্দার আলী বাদী হয়ে আজ শুক্রবার বগুড়া সদর থানায় মামলাটি করেন। মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিহত সেলিম হোসেন (৩৫) বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পীরব ইউনিয়নের পালিকান্দা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ৪ আগস্ট বিকেল তিনটার দিকে বগুড়ার সাতমাথা এলাকায় আইএফআইসি ব্যাংকের সামনে আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্যসহ সাত নেতার নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এই হামলার সময় ককটেল ও পেট্রোলবোমা ব্যবহার করা হয়, যা সেলিম হোসেনকে মারাত্মকভাবে আহত করে। পরে, বগুড়া পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুল মতিন সরকার ও আমিনুল ইসলাম তাকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে এবং আরিফুর রহমান হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। এরপর অন্যান্য হামলাকারীরা অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি টি জামান নিকেতা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম, এবং শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান। এছাড়াও, মামলায় ২৫ জনপ্রতিনিধি ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার আইনি সহায়তাকারী ও বগুড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি আবদুল বাসেত বলেন, “সেলিম হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাননি। ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ায় শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে তাঁকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ কারণে তাদেরকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে মামলায় আসামি করা হয়েছে।”
বর্তমানে মামলাটি বগুড়া সদর থানায় তদন্তাধীন রয়েছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।