বাংলাদেশের অন্যতম ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, বিগত সরকারকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গুম, খুন, দুর্নীতি এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে বিচার দাবিতে আজ শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি ২০২৫) জুমার নামাজের পর সারাদেশে একযোগে গণমিছিলের আয়োজন করেছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ছাত্রশিবিরের এই গণমিছিলের মূল উদ্দেশ্য হলো বিগত সরকারের সময় সংঘটিত গুম, খুন, দুর্নীতি এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা। বিশেষ করে, জুলাই মাসে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, জুলাই গণহত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ জুমার নামাজের পর সারাদেশে ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে। সংগঠনটি সকল সদস্য ও সমর্থকদের এই গণমিছিলে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া, সাধারণ জনগণকেও এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শামিল হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জুলাই মাসে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩২ জন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকও রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এছাড়া, গুম ও জুলাই-আগস্ট গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে সরকার। এর মধ্যে ৭৫ জনের বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ এবং বাকি ২২ জনের বিরুদ্ধে গুমের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির বিভিন্ন সময় জাতীয় ও সামাজিক ইস্যুতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। সম্প্রতি ৫৪তম বিজয় দিবস উপলক্ষে সংগঠনটি ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল, যার মধ্যে র্যালি, আলোচনা সভা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর জিয়ারত, রচনা ও কুইজ প্রতিযোগিতা, ইয়াতিম ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাথে খাবার গ্রহণ, মেধাবী ও সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, মেডিক্যাল ক্যাম্প ও ব্লাড ডোনেশন প্রোগ্রাম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কবিতা পাঠের আসর ও দেয়ালিকা প্রকাশ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ছাত্রশিবিরের এই গণমিছিলের ঘোষণা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে, যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। সাধারণ জনগণকে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।