ঢাকা, ২৯ জানুয়ারি: প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল এবং তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে দুই বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র এ রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি, তাদের ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় রাসেল ও শামীমা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। আদালত তাদের পলাতক ঘোষণা করে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, ২০২১ সালের ২০ মার্চ চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে ইভ্যালি থেকে একটি ইয়ামাহা আর ওয়ান ফাইভ বাইক অর্ডার করেন ভুক্তভোগী তৌফিক মাহমুদ। বাইকের মূল্য ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন তিনি। এরপর ৩ এপ্রিল তিনি আরও দুটি বাইক অর্ডার করেন, যার জন্য ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা প্রদান করেন।
কর্তৃপক্ষ ৪৫ দিনের মধ্যে বাইক সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যেও তা ডেলিভারি করতে ব্যর্থ হয়।
পরবর্তীতে ইভ্যালির ধানমন্ডি অফিসে যোগাযোগ করলে প্রতিষ্ঠানটি তৌফিক মাহমুদকে দুটি চেক দেয়। কিন্তু পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় চেকগুলো নির্ধারিত তারিখে ব্যাংকে জমা না দিতে অনুরোধ করা হয়।
রাসেল-শামীমার প্রতিশ্রুতি বিশ্বাস করে তৌফিক চেক জমা দেননি। তবে সময় পেরিয়ে গেলেও ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা ফেরত পাননি তিনি। একাধিকবার তাগাদা দেওয়ার পরও কোনো সাড়া না পাওয়ায় আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
শেষ পর্যন্ত প্রতিকার না পেয়ে ২০২৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন তৌফিক মাহমুদ।
ইভ্যালির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। হাজারো গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ, অর্ডারকৃত পণ্য ডেলিভারি না দেওয়া, লোভনীয় অফারের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে তা ফেরত না দেওয়া ইত্যাদি কারণে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্ণধার মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
এই রায়ের মাধ্যমে ই-কমার্স প্রতারণার বিরুদ্ধে একটি দৃষ্টান্তমূলক বার্তা দেওয়া হলো বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ভুক্তভোগীরা তাদের অর্থ ফেরত পাবেন কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়।