স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের আন্দোলন
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধ করেছে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শাহজাদপুরের বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়কের বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করে। তাদের আন্দোলনের ফলে মহাসড়কের উভয় পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের আন্দোলন
টির স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ হয়নি। এর ফলে তারা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। ভাড়া করা ভবনে ক্লাস এবং অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় শিক্ষার মান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বলেন, “একটি স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পূর্ণতা পায় না। আমরা চাই দ্রুততার সঙ্গে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ হোক।”
শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির পক্ষে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া নেওয়া একাডেমিক ভবন-৩ থেকে শুরু হয়ে বিসিক বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছায়। সেখানে তারা সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা এই অবরোধে বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়কের যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। দুপুর আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিলেও তাদের দাবির প্রতি দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, “স্থায়ী ক্যাম্পাসের নির্মাণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করব।” তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
২০১৬ সালে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও দীর্ঘ সাত বছরেও প্রতিষ্ঠানটির স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হয়নি। এতে করে শিক্ষার্থীরা সঠিক শিক্ষার পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
ভাড়া করা ভবনে শ্রেণিকক্ষের সীমাবদ্ধতা, লাইব্রেরি ও গবেষণাগার না থাকা, এবং আবাসন সমস্যার কারণে শিক্ষার্থীরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন জানিয়েছে, স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য কার্যক্রম চলছে। জমি অধিগ্রহণ এবং অন্যান্য প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংবেদনশীল। আশা করছি খুব শিগগিরই স্থায়ী ক্যাম্পাসের কাজ শুরু হবে।”
সড়ক অবরোধের কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হলেও অনেকেই শিক্ষার্থীদের দাবিকে যৌক্তিক বলে সমর্থন জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, “একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়া পূর্ণতা পায় না। শিক্ষার্থীদের এই দাবি দীর্ঘদিনের এবং তা দ্রুত পূরণ করা উচিত।”
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধ করে তাদের আন্দোলনকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। তাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। প্রশাসনের উচিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করা।
সড়ক অবরোধের প্রভাব
- যানজট: বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
- স্থানীয় ব্যবসায়ী ও যাত্রীদের অসুবিধা: সড়ক অবরোধের কারণে যাত্রী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হন।
- সংহতি: অনেক পথচারী ও সাধারণ মানুষ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের দ্রুত সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ শুরু হলে শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন থেকে সরে আসবে এবং এক উন্নত শিক্ষার পরিবেশে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে।