ওয়াশিংটন, ২৬ জানুয়ারি:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদের শপথ গ্রহণের রাতেই ৯০ দিনের জন্য সকল বিদেশি সহায়তা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত সারা বিশ্বে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষত, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো, যারা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল, তাদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে ভূমিকা পালন করে আসছে। খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সুশাসন এবং পরিবেশ সংরক্ষণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করেছে।
ইউএসএআইডি-এর তথ্যমতে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ উন্নয়ন কার্যক্রম বাংলাদেশে পরিচালিত হয়। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ২.৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা প্রদান করেছে। এই সহায়তা শুধুমাত্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্যই নয়, বরং কক্সবাজারসহ স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ৪৯০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্রদান করে, যা খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যবহৃত হয়েছে। তবে, এই সহায়তা স্থগিত হওয়ার ফলে চলমান প্রকল্পগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের মতে, এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি পুনর্মূল্যায়নের অংশ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, “আমাদের নীতি হবে এমন যা যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ, শক্তিশালী এবং সমৃদ্ধ করে।” এই ঘোষণায় স্পষ্ট হয়েছে, মার্কিন স্বার্থের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয় এমন সহায়তা কার্যক্রমগুলো ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
বাংলাদেশের জন্য এই পরিস্থিতি কেবলমাত্র একটি চ্যালেঞ্জ নয়, বরং স্বনির্ভরতার পথে এগিয়ে যাওয়ার একটি বার্তাও বহন করে। এ পরিস্থিতিতে সরকারকে উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে হবে এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়ন প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের নীতি পরিবর্তন দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলা এবং স্থিতিশীলতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।