১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) এম রাশেদ চৌধুরী, বীরপ্রতীক। সম্প্রতি সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের একটি লাইভ অনুষ্ঠানে তিনি প্রথমবারের মতো জামায়াতে ইসলামী ও রাজাকার বাহিনীর কর্মকাণ্ড নিয়ে তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
রাজাকারদের ভূমিকা সম্পর্কে রাশেদ চৌধুরীর অভিমত
রাশেদ চৌধুরী জানান, ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় তার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের সরাসরি যোগাযোগ ছিল না। তিনি জেড ফোর্সের অধীনে থেকে সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তার কথায়,
“যুদ্ধের ময়দানে আমাদের ইউনিট সম্পূর্ণরূপে ব্যস্ত ছিল। কোনো পলিটিকাল এলিমেন্টের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়নি। যুদ্ধ চলাকালীন আমার এলাকায় রাজাকার বা জামায়াতে ইসলামীর কাউকে দেখিনি।”
অনুষ্ঠানে উঠে আসে যুদ্ধকালীন সময়ে রাজাকারদের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ। যেমন: নারীদের ধরে পাকিস্তানি সেনাদের কাছে হস্তান্তর করা ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে যুদ্ধ করা। এ বিষয়ে রাশেদ চৌধুরী বলেন,
“আমার অভিজ্ঞতায় রাজাকার বা জামায়াতে ইসলামীর সাথে সরাসরি যুদ্ধের মুখোমুখি হইনি। পূর্বাঞ্চলে যেখানে আমি ছিলাম, সেখানে এসবের কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষী হইনি।”
তিনি আরও জানান, যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি সামনের সারিতে ব্যস্ত থাকায় পেছনের ঘটনাগুলোর বিষয়ে অবগত ছিলেন না।
“আমার যুদ্ধের সময়, বিশেষ করে জেড ফোর্সের সঙ্গে থাকাকালীন, এসব পলিটিকাল কার্যক্রম বা রাজাকার বাহিনীর কর্মকাণ্ড সম্পর্কে খুব একটা জানার সুযোগ হয়নি। তবে পরবর্তী সময়ে এসব নিয়ে অনেক কিছু শুনেছি,” বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন প্রশ্ন করেন, জামায়াতে ইসলামীর রাজাকার বাহিনী কীভাবে পাকিস্তানিদের সহায়তায় সংগঠিত হয়েছিলেন। উত্তরে রাশেদ চৌধুরী স্পষ্টভাবে জানান,
“আমার এলাকায়, বিশেষ করে জেড ফোর্সের সেক্টরে, এ ধরনের কোনো শক্তিশালী রাজাকার বাহিনীর উপস্থিতি আমি দেখিনি। পাকিস্তানিদের সহযোগিতায় তারা হয়তো অন্যত্র সংগঠিত ছিল, তবে সেটা আমার অভিজ্ঞতার অন্তর্ভুক্ত নয়।”