ঢাকা: জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ, দিল্লি এবং বিএনপির বক্তব্য যেন একই সুরে মিশে যাচ্ছে। বিশেষত, দিল্লির বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য মোটেও সহায়ক নয়।
শনিবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “দিল্লি এখন বিএনপির ওপর ভর করছে। কারণ, তাদের পুরনো মিত্র আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এটি বিএনপির জন্য দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হতে পারে।”
সারোয়ার তুষার ছাত্র আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “ছাত্ররা যে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি তুলেছে, তা গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। অথচ বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো এই দাবির বিষয়ে দ্বিধায় রয়েছে। তারা কেবল সংসদ নির্বাচনের দাবি তুলে বৃহত্তর সংস্কারের বিষয়টি পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য অপরিহার্য। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থে এই দাবিকে অবহেলা করছে।”
দিল্লির সাম্প্রতিক ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ছয় মাস আগেও দিল্লি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে উদাসীন ছিল। কিন্তু এখন হঠাৎ তাদের সক্রিয় হওয়ার কারণ হলো গণতান্ত্রিক বিকাশ ব্যাহত রাখা।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আওয়ামী লীগ ও দিল্লির বর্তমান অবস্থান আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ ধরনের হস্তক্ষেপ দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিপন্ন করছে।”
সারোয়ার তুষার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য শুধু নির্বাচনের দাবি যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন বড় কাঠামোগত পরিবর্তন। ছাত্রদের তোলা গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি এড়িয়ে চলার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের জনগণই সকল রাজনৈতিক দলের আসল ভরসা হওয়া উচিত, কোনো বাইরের শক্তি নয়। বাইরের শক্তির ওপর নির্ভরশীলতা আমাদের গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।”
ছাত্র আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “ছাত্রদের আন্দোলন একটি বড় পরিবর্তনের বার্তা বহন করে। এটি গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো এই আন্দোলনকে যথাযথ গুরুত্ব দিচ্ছে না।”