সরকারের হস্তক্ষেপ চায় বেক্সিমকো কর্মীরা
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা বেক্সিমকো গ্রুপের ১৬টি কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে। এই কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে গেলে ৪২ হাজার কর্মী কর্মসংস্থান হারাবে এবং এর প্রভাব পড়বে প্রায় ১০ লাখ মানুষের জীবিকায়। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বেক্সিমকোর কর্মীরা এই শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। তারা সরকারের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে বর্তমানে ১৬টি কারখানা রয়েছে, যা স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে। কর্মীরা দাবি করেছেন, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কারখানাগুলোর ৪২ হাজার কর্মীকে আর কোনো আর্থিক সহায়তা দিতে চায় না সরকার। এর ফলে, এই কর্মীরা বেকার হয়ে পড়বেন এবং তাদের পরিবার অর্থনৈতিক দুর্দশায় পড়বে।
- কারখানার সংখ্যা: ১৬টি।
- ক্ষতিগ্রস্ত কর্মী: ৪২ হাজার।
- প্রভাবিত মানুষ: প্রায় ১০ লাখ।
আন্তর্জাতিক বাজারে বেক্সিমকো গার্মেন্টস মাসে প্রায় ৩০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করে। এই গ্রুপটি দেশের রপ্তানি আয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। কর্মীরা জানিয়েছেন, কারখানাগুলো চালু থাকলে প্রতিবছর ৪৫০ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব।
- শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত।
- আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি বৃদ্ধি।
- দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব।
সংবাদ সম্মেলনে বেক্সিমকো ফ্যাশনের হেড অব অ্যাডমিন সৈয়দ মো. এনাম উল্লাহ বলেন, “৪২ হাজার শ্রমিক–কর্মচারী ও ১০ লাখ মানুষের খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকার ব্যবস্থাটুকু নিশ্চিত করুন। আমাদের দ্বিতীয় দাবি, অবিলম্বে বেক্সিমকোর ব্যাংকিং ও ব্যাক টু ব্যাক এলসি সুবিধা প্রদান করা হোক।” তিনি আরও বলেন, “ব্যাংকিং ও এলসি সুবিধা ছাড়া কোনো ব্যবসা–বাণিজ্য করা সম্ভব নয়।”
আব্দুল কাইয়ুম, যিনি বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের হেড অব অ্যাডমিন, বলেন, “কারখানাগুলো চালু রাখলে বেক্সিমকোর ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব। কিন্তু কারখানা বন্ধ করে দিলে শ্রমিকদের পাওনা মেটানোসহ সরকারের আয়ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
- কারখানা চালু রাখা: ১৬টি কারখানার কার্যক্রম চালু রাখা।
- ব্যাংকিং সুবিধা: ব্যাংকের সহযোগিতা নিশ্চিত করা।
- শ্রমিকদের বেতন: বকেয়া বেতন দ্রুত পরিশোধ।
কর্মীদের দাবি অনুযায়ী, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক বন্ধ হয়ে গেলে সরকার ১৫ হাজার কোটি টাকা পাবে। কিন্তু সব শ্রমিকের পাওনা পরিশোধে প্রয়োজন হবে ২২ হাজার কোটি টাকা। এই প্রক্রিয়ায় সরকারের আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
- শ্রমিকদের কর্মসংস্থান হারানো।
- দেশের রপ্তানি আয়ে স্থবিরতা।
- ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ব্যাঘাত।
বেক্সিমকো কর্মীরা মনে করেন, কারখানা চালু রাখার মাধ্যমে সব পক্ষেরই লাভ হবে। তারা সরকারের কাছে অবিলম্বে ব্যাংক ও এলসি সুবিধা চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন। কর্মীরা বলেছেন, “কারখানাগুলো চালু থাকলে ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব এবং সরকারের আয়ও বাড়বে।”
বেক্সিমকোর ১৬টি কারখানার বন্ধ হওয়া শুধু প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের নয়, দেশের অর্থনীতির জন্যও একটি বড় হুমকি। সরকারের উচিত এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। ব্যাংকিং সুবিধা পুনরুদ্ধার এবং কারখানা চালু রাখা নিশ্চিত করা সময়ের দাবি।