১২ কিলোমিটার ধাওয়া শেষে পুলিশের সফল অভিযান
খুলনায় একটি ট্রাক ডাকাতির চেষ্টায় পুলিশের সাহসী ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাত পৌনে দশটার দিকে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন ময়ূর ব্রিজের পূর্ব পাশ্বে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় পুলিশ ডাকাতদের পরিকল্পনা ভেস্তে দেয়। এই ঘটনায় পুলিশ দুই ডাকাতকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন যে, ময়ূর ব্রিজের পূর্ব পাশ্বে একটি ট্রাক ডাকাতি করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। স্থানীয় জনগণের সহায়তায় পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশ ট্রাকটিকে চ্যালেঞ্জ করলে সেটি দ্রুত পালানোর চেষ্টা করে।
পুলিশ জানায়, ট্রাকটি দ্রুত পালানোর সময় একজন ডাকাত লাফিয়ে পড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ তাকে ধরে ফেলে। আটককৃত ওই ডাকাতের নাম রিয়াদ আলী (৩০)। তিনি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ফয়লা এলাকার বাসিন্দা এবং বরকত উল্লাহর ছেলে।
পুলিশ ট্রাকটির পিছু নেয়, যা একটি চাঞ্চল্যকর ধাওয়ায় পরিণত হয়। ধাওয়া শেষে ট্রাকটি খুলনার খালাসির মোড়, জিরো পয়েন্ট থেকে রূপসা সেতু পার হয়ে কুদির বটতলায় পৌঁছে। সেখানে পুলিশ ট্রাকটিকে জব্দ করে। একইসঙ্গে ডাকাত দলের আরেক সদস্যকে আটক করা হয়। তার নাম শেখ সুমন ওরফে মিজান (৩৫)। তিনি বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার ঢুলিগাতি এলাকার মৃত এ্যাকেন আলীর ছেলে।
ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি এবং দুই ডাকাতকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, ট্রাকটি বর্তমানে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় জব্দ রাখা হয়েছে এবং আটককৃত দুই ডাকাত থানার হাজতে রয়েছেন।
স্থানীয় জনতার সক্রিয় সহযোগিতা পুলিশের অভিযানকে সফল করেছে। ময়ূর ব্রিজের পাশ্ববর্তী এলাকাবাসীরা পুলিশের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করে ডাকাতদের ধরা সম্ভব করেছে।
এই ঘটনার পর খুলনার জনগণের মধ্যে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আস্থা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুব হোসেন বলেন, “আমরা পুলিশের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ দেখে আনন্দিত। এই ধরণের ঘটনা মোকাবিলায় তাদের আরও প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামের প্রয়োজন।”
পুলিশ জানায়, আটককৃত দুই ডাকাতের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাদের অতীত অপরাধের ইতিহাস খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাদের সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ডাকাত দলের সঙ্গেও যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা তদন্ত করা হচ্ছে।
এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে পুলিশ মহানগরী এবং আশপাশের এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার পরিকল্পনা করছে। সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ টহল এবং চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে।
খুলনায় পুলিশের এই দ্রুত এবং কার্যকরী পদক্ষেপ সবার প্রশংসা অর্জন করেছে। স্থানীয় জনতা ও পুলিশের সমন্বয়ে এই ধরণের অপরাধ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই কার্যক্রম খুলনাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।