একটি তীব্র সহিংস ঘটনার সাক্ষী বাংলামোটরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যালয়
রাজধানীর বাংলামোটরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যালয়ে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যার কারণে অন্তত সাতজন ছাত্র আহত হয়েছেন। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কার্যালয়ের ভেতরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা নাঈম হামিদ পৃথু নামে এক শিক্ষার্থীকে মারধর করার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার প্রতিবাদে কার্যালয়ে উপস্থিত হন আরো কিছু সদস্য, যার ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে সেখানে চলে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন— নাঈম আবেদিন, ইমরান হোসেন (২২), আনতা মীম (২১), আশাফ উদ্দিন বাবু (২২), আসিফ (২৪), আফছার উদ্দিন বাবু (২৪), মাসুদ (২৪), ও আলমিন (২৪)। আহতদের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, গতকাল সোমবার যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি মতবিনিময় সভা ছিল, যেখানে তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। সেই ঘটনার জের ধরেই আজ আবারো কার্যালয়ে হামলার শিকার হতে হয় তাদের।
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার যাত্রাবাড়ী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানেই নাঈম হামিদ পৃথু নামে এক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয় এবং এই ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য আশিকুজ্জামান হৃদয়, শিমুলসহ আরো কয়েকজন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ দুপুরে প্রধান কার্যালয়ে আলোচনার জন্য বসার পরিকল্পনা ছিল, যেখানে মীমাংসার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু আলোচনায় কথিত সুরাহার বদলে তা আবার সংঘর্ষে রূপ নেয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা প্রদান করছেন চিকিৎসকরা। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত আহত সাতজন চিকিৎসা নিতে এসেছেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, দিন দিন এই ধরনের সংঘর্ষ পরিস্থিতি আরও অবনতি হচ্ছে। এসব ঘটনা যেন এখন চরম রূপ ধারণ করেছে, যা শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পথকে কঠিন করে তুলছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এই ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে তারা বারবার প্রতিবাদ করবেন এবং তাদের আন্দোলন স্থায়ীভাবে বহাল রাখবেন। তারা আরও জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবিগুলো তুলে ধরতে তারা আশাবাদী এবং সরকারকে তাদের সমস্যাগুলো সমাধানের আহ্বান জানাবেন।
এই সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠছে।
এই ঘটনার সংবাদটি সংবাদমাধ্যমের এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে স্থান পাবে, কারণ এটি শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর হামলা এবং সহিংসতার চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এই সহিংসতার ঘটনার মাধ্যমে আবারো ছাত্র আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভাঙন ধরেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এর নিরসনের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এছাড়া সাধারণ জনগণের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। এখন এই পরিস্থিতি কীভাবে স্বাভাবিক হবে, সেটি দেখার অপেক্ষা থাকবে।