মাউকেনরৌ গ্রামে অশান্তি, পুলিশের লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল ব্যবহারে আহত ১২
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ের ইস্ট খাসি হিলস জেলার মাউকেনরৌ গ্রামে রামকৃষ্ণ মিশনের নির্মীয়মাণ একটি স্কুলে স্থানীয় জনগণের ভাঙচুরের ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন গ্রামে কারফিউ জারি করেছে।
সোমবার, প্রায় ২৫০ জন নারী-পুরুষের একটি দল নির্মীয়মাণ স্কুলটিতে ভাঙচুর চালায়। পুলিশ জানায়, জনতা প্রথমে স্কুলটির বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং টিয়ার শেল ফাটায়। এই ঘটনায় অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে চারজন পুলিশকর্মীও রয়েছেন।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে প্রশাসন মাউকেনরৌ গ্রামে কারফিউ জারি করেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে এবং শান্তি বিঘ্নিত হয়ে জানমালের ক্ষতি হতে পারে।” পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ বহাল থাকবে।
স্থানীয় সূত্রমতে, রামকৃষ্ণ মিশন ২০২২ সালে গ্রামপ্রধানের কাছ থেকে জমিটি স্কুল নির্মাণের জন্য গ্রহণ করে। তবে বর্তমান গ্রামপ্রধান সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে জমি ফেরত চেয়েছেন। বিতর্কিত জমিটি আদিবাসীদের সম্পত্তি এবং পূর্বে গ্রামটির খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হত। যদিও এই অশান্তির পেছনে কোনো ধর্মীয় ইস্যু নেই বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় সূত্র।
পুলিশ জানায়, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং শান্তি বজায় রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে আলোচনা করা হচ্ছে।
গ্রামের অনেক বাসিন্দা স্কুল নির্মাণের বিরুদ্ধে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছেন। তারা দাবি করেন, এটি তাদের ঐতিহ্যবাহী জমি এবং সেখানে স্কুল নির্মাণ আদিবাসী অধিকার লঙ্ঘনের শামিল। তবে রামকৃষ্ণ মিশনের পক্ষ থেকে এই জমি আইনগতভাবে গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
মাউকেনরৌ গ্রামে রামকৃষ্ণ মিশনের নির্মীয়মাণ স্কুল ঘিরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ উত্তপ্ত আকার ধারণ করেছে। প্রশাসন ও পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত রাখতে কাজ করছে। জমি সংক্রান্ত বিরোধ সমাধানে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট পক্ষদের মধ্যে দ্রুত সমঝোতা প্রয়োজন।