ঢাকা, বাংলাদেশ – বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট নতুন নয়। তবে, গত আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতাগ্রহণ একটি নতুন শুরুর আশার সঞ্চার করেছিল। অনেকেই ভেবেছিলেন যে, এটি দেশকে স্থিতিশীলতার দিকে পরিচালিত করবে। কিন্তু গভীর সমস্যাগুলোর সঠিক সমাধানের অভাবে সংকট আরও গভীরতর হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ছাড়া কোনো প্রশাসনের জন্য রাজনৈতিক ভিত্তি গড়া প্রায় অসম্ভব। বাস্তবে, এই পরিস্থিতি একটি অপারেশনাল সংকটের দিকেও ইঙ্গিত করে। এটি এমন, যেন কোনো এয়ারপোর্ট ক্লিনারকে যাত্রী ভর্তি এয়ারবাস পরিচালনা করতে বলা হয়েছে।
—
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্যালেন্ডার, ধর্মীয় রীতিনীতি ও সংস্কৃতি শাসন ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে। রমজান, ঈদ উল ফিতর এবং ঈদ উল আযহার মতো উৎসবগুলোতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রম বাড়ে। এই সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
তিন মাসের এই সময়কাল জনজীবনে অর্থনৈতিক লেনদেন এবং ধর্মীয় ভক্তির প্রাধান্য তৈরি করে। রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণত এই সময়ে আন্দোলন স্থগিত রাখে, কারণ এটি জনগণের সমর্থন জোগাড় করার জন্য কার্যকর সময় নয়।
—
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন নিজেকে একটি টিকটিক ঘড়ির মতো অবস্থানে খুঁজে পাচ্ছে। বিশেষ করে ফেব্রুয়ারি মাসকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদি তারা ঈদুল আযহা পর্যন্ত আন্দোলন স্তিমিত রাখতে পারে, তাহলে তাদের ক্ষমতার মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।
তবে, উৎসবের মৌসুম শেষ হওয়ার পর কী ঘটবে তা এক বড় প্রশ্ন। বিএনপি ইতিমধ্যেই একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, জামায়াত পরিস্থিতিকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে।
—
অন্তর্বর্তী সরকারকে একটি অনিবার্য রাজনৈতিক ঝড়ের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। যদিও তারা এখন পর্যন্ত কোনো দীর্ঘমেয়াদী সমাধান দিতে ব্যর্থ হয়েছে, ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের সঠিক প্রস্তুতি প্রয়োজন।
বাংলাদেশের বর্তমান সংকট শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার দিকেও প্রভাব ফেলছে। সময়ই বলে দেবে, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি আসন্ন ঝড় সামলাতে পারবে, নাকি এটি আরও বড় সংকটের জন্ম দেবে।
কী হবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ? রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কি ফিরে আসবে? আপাতত, এই প্রশ্নগুলোই ঘুরপাক খাচ্ছে দেশের রাজনৈতিক ও সাধারণ মানুষের মনে।