ঢাকা: সদ্য বিদায়ী আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ছয়টি ব্যাংককে ইচ্ছেমতো লুট করে গভীর সংকটে ফেলে দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গর্ভনর নিয়োগের পর এই পরিস্থিতি আরও প্রকট হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এসব ব্যাংকের তহবিলের বিশাল অংশ এস আলম গ্রুপ ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণের নামে আত্মসাৎ করেছে, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে।
এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। এসব ব্যাংক ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ ও নগদ জমার ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ সুবিধার মাধ্যমে এতদিন টিকিয়ে রাখা এসব ব্যাংকগুলোর পুনরুদ্ধার সম্ভব না হলে তা পুরো ব্যাংকিং খাতের জন্য বড় ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াবে। সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এই বিশেষ সুবিধা দিয়ে ব্যাংকগুলোকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু বর্তমান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এই নীতিতে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছেন।
ইসলামী ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকগুলো এস আলম গ্রুপের সাথে জড়িত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিপুল পরিমাণ ঋণ প্রদান করেছে, যার বেশিরভাগই পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়নি। ব্যাংকগুলোর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষের সঞ্চয় ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
এসব ব্যাংকের পরিচালন পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনায় এস আলম গ্রুপের লোকজন থাকায় ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। দেশের অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এখন সময় এসেছে ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের।
উপসংহার
এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ছয়টি ব্যাংক দেশের ব্যাংকিং খাতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ব্যাংক পুনরুদ্ধারে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। অন্যথায়, পুরো ব্যাংকিং খাতেই এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে, যা দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে।