কক্সবাজারের সীমান্তবর্তী উপজেলা টেকনাফের গহীন পাহাড়ে এক বন্যহাতির রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, হাতিটির আনুমানিক বয়স ৮ থেকে ১০ বছর। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে টেকনাফ হ্নীলা বিটের পাহাড়ি ছড়া থেকে হাতিটি মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। টেকনাফ সহকারী বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের মতে, গহীন পাহাড়ে একটি বন্যহাতির মৃত্যুর খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে মৃত অবস্থায় একটি হাতি দেখতে পান। স্থানীয় একজন জানান, “পাহাড়ি এলাকায় প্রায়ই হাতির পালের দেখা মেলে। তবে এমন মৃত্যু খুবই দুঃখজনক।”
টেকনাফ সহকারী বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম জানান, শনিবার সকালে হ্নীলা বিটের পাহাড়ি ছড়ায় মৃত অবস্থায় হাতিটি পাওয়া যায়। হাতিটির ওজন এবং আকার দেখে এটি ৮-১০ বছর বয়সী বাচ্চা হাতি বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, হাতিটি পাহাড় থেকে পড়ে গিয়ে মারা যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। আপাতত সুরতহাল শেষে হাতিটিকে পাহাড়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।”
এটি টেকনাফ অঞ্চলে বন্যহাতির মৃত্যুর প্রথম ঘটনা নয়। এর আগেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একটি হাতির মৃত্যু ঘটেছিল। বন বিভাগের তথ্যমতে, টেকনাফের ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি বন্যহাতির পাল বসবাস করে। তবে মানুষের সঙ্গে এই বন্যপ্রাণীদের সংঘাত এবং দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বন বিভাগ জানিয়েছে, টেকনাফে হাতি সংরক্ষণে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে বন্যপ্রাণী এবং স্থানীয় জনগণের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে আরও পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন।
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, পাহাড়ি এলাকায় হাতিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যুতের তারের ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা উচিত। পাশাপাশি হাতিদের চলাচলের পথে বাধা সৃষ্টি না করার জন্য সচেতনতা বাড়ানো দরকার।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং দুর্ঘটনা রোধে টেকনাফ বন বিভাগ স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। গহীন পাহাড়ে বন্যপ্রাণীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উন্নত নজরদারি ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
টেকনাফের গহীন পাহাড়ে বন্যহাতির রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা আমাদের বনজ সম্পদের সুরক্ষায় আরও উদ্যোগী হতে উদ্বুদ্ধ করে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।