সাধারণ মানুষের নাগালে ইলিশ: বিএফডিসি’র অভিনব পদক্ষেপ
ইলিশ মাছ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় এই মাছের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। এই সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) সাশ্রয়ী মূল্যে ইলিশ বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের আওতায় ৪৫০ থেকে ৮৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ প্রতি কেজি ৬০০ টাকায় বিক্রি করা হবে।
আগামীকাল রবিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে কারওয়ান বাজারের বিএফডিসি ভবনের মৎস্যবিতানে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। বিএফডিসির পরিচালক অদ্বৈত চন্দ্র দাস জানিয়েছেন, এই লটে মোট ৮৫০ কেজি ইলিশ বিক্রয়যোগ্য এবং ক্রেতারা আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে মাছ ক্রয় করতে পারবেন।
বিএফডিসির তথ্য অনুযায়ী, ‘ইলিশ মাছের সরবরাহ ও মূল্য শৃঙ্খলে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ’ প্রকল্পের আওতায় এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য হলো সাধারণ জনগণের দোরগোড়ায় কম দামে ইলিশ পৌঁছে দেওয়া।
বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাথে যৌথভাবে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বিএফডিসি। স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে: ‘স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়—ইলিশ কিনে হোন ধন্য।’
বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এনাম চৌধুরী বলেছেন, ‘মানুষকে কম দামে ইলিশ খাওয়াতে কোনো প্রফিট ছাড়াই আমরা এই কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছি। পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হওয়া এই উদ্যোগ সফল হলে ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে তা বাস্তবায়ন করা হবে।’
বিএফডিসি ও বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ প্রচেষ্টায় ইলিশ বিপণনের এই কার্যক্রম শুধু পরীক্ষামূলক নয়, এটি দেশের মৎস্যখাতে একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। সাশ্রয়ী মূল্যে ইলিশ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
বাজারে ইলিশের দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জন্য এই মাছ কেনা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তবে বিএফডিসি’র এই উদ্যোগে তারা কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন। ক্রেতারা মনে করছেন, এই কর্মসূচি ইলিশের বাজার নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশের মৎস্যখাতের উন্নয়নে বিএফডিসি’র এই উদ্যোগ একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সাশ্রয়ী মূল্যে ইলিশ সরবরাহের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের প্রাপ্তি সহজতর করার পাশাপাশি এটি বাজার স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
এখন দেখা যাক, এই উদ্যোগ কতটা সফল হয় এবং এর প্রভাব বাজারে কেমন হয়। ভবিষ্যতে এই ধরনের কর্মসূচি আরও বড় পরিসরে চালুর জন্য সবাই মুখিয়ে আছে।