ঢাকা, ১৫ জানুয়ারি: রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনিকে নৃশংসভাবে হত্যার ১৩ বছর পার হলেও এখনো হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়নি। সাগর-রুনির শিশু পুত্র মেঘ আজো তার বাবা-মায়ের হত্যার বিচার পায়নি। ২০১২ সালের এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বিভিন্ন সময়ে গঠন করা হয়েছে টাস্কফোর্স, তবে হত্যার মূল রহস্য এখনো ধোঁয়াশায়।
সাম্প্রতিক তদন্তের অংশ হিসেবে গত ১৫ জানুয়ারি ঢাকার কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সাবেক র্যাব কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল আহসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআই প্রধান ও টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল জানান, ২০১২ সালে হত্যাকাণ্ডের দিন সকাল ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন জিয়াউল আহসান। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কোনো তথ্য জানেন কিনা এবং তার সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে কোনো বক্তব্য আছে কিনা।
পিবিআই সূত্র জানিয়েছে, টাস্কফোর্সের সদস্যরা শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যান এবং প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে জিয়াউল আহসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এর আগে ৩০ ডিসেম্বর এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান এবং গত সপ্তাহে বিএফইউজে-এর সাবেক সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের পরপরই তৎকালীন র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন জিয়াউল আহসান। এ ঘটনায় তার ভূমিকা নিয়ে শুরু থেকেই আলোচনা ছিল, যা নতুন করে সামনে এসেছে টাস্কফোর্সের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ছিলেন মাছরাঙা টিভির বার্তা সম্পাদক এবং মেহেরুন রুনি ছিলেন এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। তাদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর রুনির ভাই নওশের আলম শেরে-বাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে দীর্ঘ এক যুগ পার হলেও বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়নি।
সাংবাদিক সমাজের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মাঝেও এই হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া নিয়ে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড তদন্তের এই নতুন পর্যায় কি কোনো অগ্রগতি আনবে, তা নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সাংবাদিক সমাজও অধীর অপেক্ষায়।