ঢাকা: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার নির্দেশের পর এবার নিজেই নিজের সম্পদ বিবরণী প্রকাশ করলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে তিনি নিজের সম্পদ ও আর্থিক অবস্থার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
ফেসবুক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার দনিয়া অঞ্চলে তার পৈতৃক একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। ২০০০ সালে নির্মিত পাঁচতলা ভবনের ১১৫০ স্কয়ারফিটের ওই ফ্ল্যাটটি তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। বর্তমানে তার ভাই সেখানে বসবাস করছেন।
শফিকুল আলম লিখেছেন, “জীবনের কোনো এক সময় হয়তো দনিয়ায় ফিরে যাবো। বাড়িতে গেলে এখনও করিডোরে বাবা-মাকে হাঁটতে দেখি। আমার প্রয়াত বাবার কোরআন তেলাওয়াতের শব্দ শুনি এবং মায়ের সালাত আদায়ের দৃশ্য মনে পড়ে।”
২০১৪ সালে শাহীনবাগে একটি ১১০০ স্কয়ারফিটের ফ্ল্যাট কিনেছিলেন বলে পোস্টে উল্লেখ করেছেন শফিকুল আলম। ভাই এবং শ্বশুরবাড়ির কাছ থেকে কিছু আর্থিক সহায়তা নিয়ে ফ্ল্যাটটি কেনা হয়। তিনি বলেন, “আমি জায়গাটি ভালোবাসি। তবে নিরাপত্তার কারণে হয়ত খুব শিগগিরই এই ফ্ল্যাট ছেড়ে যেতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, এলাকার তরুণদের কাছ থেকে নেতিবাচক আচরণের মুখোমুখি হতে হয়েছে। “কিছুদিন আগে আড্ডার সময় কয়েকজন আমাকে ‘গণশত্রু’ বলে ডেকেছিল। এ কারণে হয়ত আমাকে শিগগিরই সরকারি ফ্ল্যাটে চলে যেতে হবে,” যোগ করেন তিনি।
শফিকুল আলম জানান, পাঁচ বছর আগে তিনি ময়মনসিংহে তার এক শ্যালকের কাছ থেকে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। একই ভবনে তার স্ত্রীও একটি ফ্ল্যাট পেয়েছেন। এগুলো তাদের মাসিক আয়ের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি গ্রামে তার ৪০ শতাংশ আবাদি জমি রয়েছে।
নিজের আর্থিক বিবরণী প্রকাশ করে শফিকুল আলম জানান, তার একটি মাত্র ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা জমা রয়েছে। তিনি বলেন, “এই অর্থের বেশিরভাগই এএফপিতে দুই দশক কাজ করার পেনশন ও গ্র্যাচুইটি। কিছু মানুষ আমার কাছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ধার নিয়েছে। ধারণা করি, বছরের শেষে সঞ্চয় হয় অপরিবর্তিত থাকবে, নয়তো কিছুটা কমে যাবে।”
শফিকুল আলম আরও উল্লেখ করেন, তার একটি ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে। ঢাকা শহরে গাড়ি পরিচালনার মাসিক খরচ প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
শফিকুল আলমের এই পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তার আর্থিক বিবরণী প্রকাশকে অনেকেই স্বচ্ছতার প্রতীক হিসেবে দেখছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদ প্রকাশে এ ধরনের উদ্যোগ নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।