ঢাকা: রাজধানীর তিতুমীর কলেজে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের জেরে সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে হট্টগোল ও নারী হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, ‘তিতুমীর ঐক্য’ নামে গঠিত একটি সংগঠনের নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধ থেকেই এই ঘটনা শুরু হয়। সকালে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে তিতুমীর ঐক্যের পক্ষ থেকে শহীদ বরকত মিলনায়তনের সামনে একটি কর্মসূচি চলছিল। তবে এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের একাংশের সদস্যরা উত্তেজনা ছড়ায়।
তিতুমীর ঐক্যের সদস্য রায়হান জানান, ছাত্রদলের সদস্য মেহেদী, আল-আমিন, লাকি এবং আরও অনেকে তাদের সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত করার দাবি তুলে চাপ সৃষ্টি করেন। পরে জোরপূর্বক লিখিতভাবে কমিটি বিলুপ্ত করার ঘোষণা আদায় করেন। রাশেদ, আমিনুল ও মাহমুদের কাছ থেকে প্রেস ব্রিফিংয়ের ভিডিও রেকর্ড করিয়েও নেওয়া হয়।
তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির ফেসবুক পেজে সংঘর্ষের একটি ভিডিও প্রকাশ হলে ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান নেতারা সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন। অভিযোগ উঠেছে, তাদের কয়েকজন সাংবাদিক সমিতির দরজা-জানালায় আঘাত করে এবং ভেতরে ঢুকে সাংবাদিকদের চাপ প্রয়োগ করেন।
ঘটনার সময় এক নারী সাংবাদিক ভিডিও করতে গেলে ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াদ হাওলাদারসহ কয়েকজন তাকে ঘিরে ধরে। ভিডিও ডিলিট করতে বাধ্য করেন এবং তাকে জেরা করেন। এ সময় তার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে।
তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাবেদ ইকবাল বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমি চেষ্টা করেছি। যারা উত্তেজিত ছিল, তাদের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করেছি।”
অন্যদিকে, নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ অভিযোগ করেন, “সাংবাদিক সমিতি উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের নামে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করেছে।”
তবে, সাংবাদিক সমিতির অভিযোগ, ছাত্রদলের একাংশ তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে।
তিতুমীর ঐক্যের কার্যনির্বাহী সদস্য আমিনুল ইসলাম জানান, “আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় আন্দোলন করেছি। তবে ছাত্রদলের একটি পক্ষ আমাদের আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে চেয়েছে এবং আমাদের কমিটিগুলো স্থগিত করতে বাধ্য করেছে।”
তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমাম হোসেন বলেন, “এই ঘটনায় জড়িতরা তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের কেউ নন। আমরা কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানিয়েছি, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।