ঢাকা, ১৬ জানুয়ারি:
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে প্রণীত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এতে অংশগ্রহণ করেন। ঘোষণাপত্রের খসড়ায় দেশের স্বাধীনতা, সংবিধান ও নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপরেখা তুলে ধরা হয়।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে একটি সর্বসম্মত ঘোষণাপত্র প্রণয়নের আহ্বান জানানো হয়। অন্তর্বর্তী সরকার এই উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং সর্বদলীয় মতামতের ভিত্তিতে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ চূড়ান্ত করার উদ্যোগ নেয়।
তিন পৃষ্ঠার এই ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস, সংবিধানের ত্রুটি, রাজনৈতিক সংকট এবং ১/১১-এর ষড়যন্ত্রের পরিণতি তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলের বিশ্লেষণ এবং নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপরেখা প্রদান করা হয়েছে।
ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়:
বাংলাদেশের জনগণ ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন ও পাকিস্তানের শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল।
১৯৭২ সালের সংবিধান জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছিল।
১/১১-এর মাধ্যমে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অবক্ষয় ঘটে।
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনে গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন হয়েছে।
উন্নয়নের নামে লুটপাট, পরিবেশবিনাশ এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ধ্বংস সাধন করা হয়েছে।
নতুন বন্দোবস্তের প্রস্তাবনা
‘জুলাই ঘোষণাপত্রে’ উল্লেখ করা হয়েছে:
1. ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন: এই সরকার ফ্যাসিবাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে।
2. ১৯৭২ সালের সংবিধানের সংস্কার বা বাতিলের প্রস্তাব: নতুন সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে শোষণমুক্ত ও গণমুখী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো হয়েছে।
3. গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার: ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সংঘটিত অপরাধগুলোর উপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করার অভিপ্রায় প্রকাশ করা হয়েছে।
4. নতুন প্রজাতন্ত্রের রূপরেখা: সব ধরনের নিপীড়ন, শোষণ এবং বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে তরুণদের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে একটি নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবি জানানো হয়েছে।