গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি পোশাক কারখানার নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে বুধবার দুপুরে উপজেলার পাগাড় সোসাইটি মাঠ এলাকায় উইন্ডি অ্যাপারেল লিমিটেড কারখানার সামনে। আহতদের মধ্যে রয়েছেন যুবদল, গণঅধিকার পরিষদ এবং মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দলের সদস্যরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উইন্ডি অ্যাপারেল লিমিটেড কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঝুটের ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কারখানাগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর এ ধরণের তৎপরতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বুধবার সাবেক এমপি হাসান উদ্দিন সরকারের কর্মচারী কিবরিয়া খান জনির লোকজন কারখানা থেকে ঝুট সংগ্রহ করতে গেলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। একই সময়ে ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হন। এর ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায় এবং পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে পাঁচজন গুরুতর আহত হন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম জানান, “কারখানার মালিক পক্ষ থেকে কেউ আমাদের জানায়নি যে কারখানা থেকে ঝুট বের করা হবে। সংঘর্ষে বিএনপির দুই পক্ষ ছাড়াও অজ্ঞাত কয়েকটি দল অংশ নিয়েছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, টঙ্গী অঞ্চলে ঝুট ব্যবসা নিয়ে প্রায়ই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তারা দাবি করেন, ব্যবসায়িক স্বার্থে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এ ধরণের সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
সম্প্রতি রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং স্থানীয় ব্যবসায়িক স্বার্থের কারণে টঙ্গীতে সহিংস ঘটনার মাত্রা বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, স্থানীয় প্রশাসন এবং রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবই এ ধরনের সংঘর্ষের মূল কারণ।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, টঙ্গী অঞ্চলের রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধে দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা এবং আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ অত্যন্ত জরুরি।